বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার ভোর— ইডির দাবি, ১৯ ঘণ্টার অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের সদ্য বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রী পার্থ চট্টপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকে নগদ ২৭ কোটি ৯০ লাখ রুপি উদ্ধার হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি ৯০ লাখ রুপি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করে ইডি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪৯.৮ কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়। প্রশ্ন উঠেছে এত রুপি আসলে কার? যদিও তার বাড়ি থেকে এই রুপি উদ্ধার হলেও অর্পিতার দাবি, এগুলো সবই পার্থের। তবে এখনও কোনও কথাই খোলসা করে জানায়নি ইডি।
সূত্রের খবর, জেরায় ইডি কর্মকর্তাদের কাছে এমনই দাবি করেছেন অর্পিতা। তিনি আরও দাবি করেছেন, তার বাড়িতে কত রুপি রাখা আছে তিনি জানতেন না।
অর্পিতা নাকি জানিয়েছেন, পার্থের কর্মীরা এসে সেখানে রুপি রেখে দিতেন। শুধু তাই-ই নয়, যেখানে এই রুপি রাখা হত, সেই ঘরে প্রবেশ করার এখতিয়ার তার ছিল না।
এই অভিযোগ আনার পরই তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে, এই রুপি কি সত্যিই পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের? তবে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় পার্থ নির্বাচন কমিশনের কাছে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তার হিসাব কিন্তু অন্য কথা বলছে।
২০২১ সালে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে দাঁড়ানো তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা পার্থ নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছিলেন, তার হাতে নগদ রয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৬ রুপি।
একই সঙ্গে স্থায়ী আমানত এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে দু’টি ব্যাংকের ৪টি শাখায় তার রয়েছে যথাক্রমে ২৪ লাখ ৮১ হাজার, ২৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৫, ১৫ লাখ ১ হাজার ১৬১ এবং ১ লাখ ৮ হাজার ৬৯ রুপি।
নিজের নামে ২৫ লাখ রুপির একটি জীবনবীমা করা রয়েছে বলেও পার্থ হলফনামায় জানিয়েছিলেন। জীবনবীমা, ব্যাংকের আমানত মিলিয়ে তার সঞ্চিত অর্থ ৯০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৩ রুপি!
পাশাপাশি, পার্থ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন, তার নিজস্ব একটিও গাড়ি নেই।
পারিবারিক সূত্রে বা নিজস্ব উপার্জনে কেনা কোনও চাষের জমিও তার কাছে নেই। হলফনামায় এমনই জানান পার্থ।
পার্থ জানিয়েছিলেন, পারিবারিক সূত্রে তার একটি বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ি নাকতলায়। নাম ‘বিজয়কেতন’। ঘটনাচক্রে, গত শনিবার ওই বাড়ি থেকেই ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ।