রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়াকে ধ্বংস করার হাতিয়ার হিসেবে ইউক্রেনকে ব্যবহারে পশ্চিমাদের প্রচেষ্টার কাছে তার দেশ কখনোই হার মানবে না। পশ্চিমারা কেবল রাশিয়াকে ধ্বংস করার জন্যই ইউক্রেনকে ব্যবহার করছে। শনিবার জাতির উদ্দেশে ইংরেজি নতুন বছরের ভাষণে এসব মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
দেশটির সরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত নববর্ষের ভিডিও বার্তায় পুতিন বলেন, রাশিয়া ‘মাতৃভূমি’ রক্ষা এবং তার জনগণের ‘সত্যিকারের স্বাধীনতা’ সুরক্ষিত করার জন্য ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে।
নিজের দুই দশকের শাসনামলে এবারের নববর্ষের দীর্ঘতম অর্থাৎ ৯ মিনিটের শুভেচ্ছা ভাষণে পুতিন পশ্চিমের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার এবং ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করতে মস্কোকে উসকানি দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি জেলার সামরিক সদর দপ্তরে রুশ সামরিক কর্মীদের সামনে পুতিনের ওই ভাষণ রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা অভিজাতরা অত্যন্ত কপটতার সাথে তাদের শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।
‘আসলে সম্ভাব্য সব উপায়ে তারা (পশ্চিমারা) নব্য-নাৎসিদের উৎসাহিত করেছে; যারা দনবাসে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সন্ত্রাস চালিয়েছে।’ পুতিন অন্যান্য সময় সাধারণত নতুন বছরের ভাষণে শুভ কামনা জানালেও এবার ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে আক্রমণাত্মক মন্তব্য আর পশ্চিমকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।
এর আগে একই দিনে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ইউক্রেনে মস্কোর বিজয় ‘অনিবার্য’ বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন। ওই সময় তিনি ইউক্রেনে রুশ সৈন্যদের বীরত্ব এবং ১০ মাসের যুদ্ধে যারা মারা গেছেন তাদের প্রশংসা করেন।
পুতিন বলেছেন, ‘পশ্চিমারা শান্তির ব্যাপারে মিথ্যা বলেছে। তারা আগ্রাসনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল… এবং এখন রাশিয়াকে দুর্বল ও বিভক্ত করার জন্য ইউক্রেন এবং এর জনগণকে ব্যবহার করছে।’
রাশিয়ার দূরবর্তী অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে মধ্যরাতে সম্প্রচারিত ভিডিও বার্তায় পুতিন বলেন, ‘আমরা কখনোই তাদেরকে এটি করতে দেব না। কেউই আমাদের সাথে এটি করতে পারবেন না।’
তবে কিয়েভ এবং পশ্চিমারা সংঘাত শুরুর বিষয়ে মস্কোর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, ভূখণ্ড দখল ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে ভিত্তিহীন আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করেছেন পুতিন।