রবিবার , ২০ মার্চ ২০২২ | ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. অস্ট্রেলিয়া
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আফ্রিকা
  6. আবহাওয়া
  7. আমেরিকা
  8. আয়ারল্যান্ড
  9. ইউক্রেন
  10. ইউরোপ
  11. ইতালি
  12. কানাডা
  13. খেলাধুলা
  14. গ্রাম বাংলা
  15. চিত্র বিচিত্র

পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বলা রুশ মডেলের মরদেহ সুটকেসে

প্রতিবেদক
Probashbd News
মার্চ ২০, ২০২২ ১:২৪ অপরাহ্ণ

Spread the love

রাশিয়ায় এক আলোচিত মডেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে একটি স্যুটকেস থেকে। এই মডেল বছরখানেক আগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা করার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন।
গ্রেটা ভেডলার নামে ২৩ বছর বয়সী ওই মডেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে পুতিনকে সাইকোপ্যাথ বা উম্মাদ অভিহিত করে বলেছিলেন, ‘রাশিয়ায় সবাইকে এক দলে আনলে পুতিনের কর্মকাণ্ডের পরিণতি হবে কান্না’।

ইতিমধ্যে গ্রেটার সাবেক বয়ফ্রেন্ড দিমিত্রি করোভিন (২৩) হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেটার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পুতিনের মনোভাব নিয়ে তার মন্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই।

জিজ্ঞাসাবাদে দিমিত্রি আরও জানান, এক বছরেরও বেশি সময় আগে মস্কোতে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে তিনি গ্রেটাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন।

এরপর মরদেহ একটি স্যুটকেসে পুরে সেটি তিনদিন নিজের হোটেল রুমেও রেখেছিলেন বলে জানান দিমিত্রি। সেখান থেকে স্যুটকেসটি গাড়িতে তুলে ৩০০ মাইল দূরের লিপেতস্ক শহরে নিয়ে গাড়ির বুটেই রেখে দেন।

গ্রেটার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোতে দিমিত্রি নিজেই নতুন পোস্ট দিতে থাকেন, যাতে কেউ গ্রেটার অনুপস্থিতি বুঝতে না পারে। পোস্টগুলো দেখে ইউক্রেনের খারকিভে বসবাসকারী গ্রেটার এক বন্ধুর সন্দেহ হলে তিনি মস্কোতে পরিচিত একজনকে গ্রেটার খোঁজ নিতে বলেন। ওই ব্যক্তি গ্রেটা নিখোঁজ হয়েছে মর্মে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়েই মরদেহের সন্ধান পান গোয়েন্দারা।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে পুতিনকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন গ্রেটা ভেডলার। বিভিন্ন আন্দোলনে পুতিনের দমন-পীড়ন নিয়ে গ্রেটা উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়গুলোকে তিনি একটি বৃহত্তর রাশিয়া গড়তে পুতিনের চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন। গ্রেটার এই হত্যাকাণ্ড এসব পোস্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় ইতিমধ্যে রুশ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

খারকিভের ওই ব্লগারের অভিযোগের ভিত্তিতে দিমিত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়ার পুলিশ। রাশিয়ান তদন্তকারী কমিটির এক ভিডিওতে দেখা গেছে, নিজের অপরাধ স্বীকার করছেন দিমিত্রি। কীভাবে গ্রেটাকে খুন করলেন, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। দিমিত্রি জানিয়েছেন, গ্রেটাকে খুন করার পর একটি হোটেলের ঘরে তার দেহের সঙ্গে তিন রাত্রি কাটিয়েছেন। তার পর গাড়িতে করে মস্কো থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে লিপেৎসক অঞ্চলে গ্রেটার দেহ নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই গাড়ির পেছনে মালপত্র রাখার জায়গায় একটি স্যুটকেসের মধ্যে রাখা ছিল গ্রেটার দেহ। দেহ-সহ সেই গাড়ি ওখানেই ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন দিমিত্রি। বছরখানেক ধরে লিপেৎসক অঞ্চলে ওই গাড়ির মধ্যে স্যুটকেসবন্দি অবস্থায় গ্রেটার দেহ পড়ে ছিল।

 

এদিকে গ্রেটার যে পোস্ট নিয়ে এত হইচই হচ্ছে, তাতে কী লিখেছিলেন তিনি? নেটমাধ্যমে পুতিনের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করেছিলেন গ্রেটা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, রাশিয়ার আধিপত্য বাড়ানোর জন্য পুতিন চেষ্টা করছেন বলেও মত ছিল তার। সেই সঙ্গে প্রতিবাদীদের উপর রাশিয়ার দমনপীড়ন নীতি নিয়েও চিন্তিত ছিলেন গ্রেটা। নেটমাধ্যমে গ্রেটা লিখেছেন, ‘ছোটবেলায় পুতিনকে অপমানিত হতে হয়েছিল। তবে (কিছুটা) খর্বকায় চেহারার জন্য প্রতিবাদ করতে পারেননি তিনি। আশ্চর্যের নয় যে আইনের পাঠ ছেড়ে পুতিন পরে কেজিবি-তে যোগ দেবেন’।

 

পুতিনকে নিয়ে গ্রেটার পর্যবেক্ষণ, ‘কিছু লোকজন ছোটবেলা থেকেই ভিতু গোছের হন। বিকট শব্দ বা অন্ধকারকে ভয় পান। অচেনা লোকজন দেখলেও কেঁপে ওঠেন। এ ধরনের লোকরা ছোট থেকেই কথাবার্তায় তেমন পটু নন। তারা সংযমী ও সতর্ক হয়ে বেড়ে ওঠেন। আমার মনে হয়, ওর (পুতিন) মধ্যে এক জন সাইকোপ্যাথ বা সোশিয়োপ্যাথ ফুটে উঠেছে’। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে নিজের দেশেই বিরোধিতার মুখে পড়েছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সরব হওয়া নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে দমনপীড়নেরও অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এই আবহে গ্রেটার খুন নিয়েও স্বাভাবিক ভাবেই নানা প্রশ্ন উঠছে।

সর্বশেষ - প্রবাস