বাংলাদেশ তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে— উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বৈশ্বিক খাতের চাপ। এসব চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশে অর্থনীতির গতি ধীর করে দিতে পারে, যা ডেকে আনতে পারে মন্দা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট‘ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
এতে ওয়াশিংটন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা, অর্থনীতিবিদ নাজমুস খান ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব।
আর্থিক খাত নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে নানা ধরনের সংকট রয়েছে, বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ নেওয়া কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এক বছর চাপে থাকবে। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশ হবে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে।
বাংলাদেশের শ্রম বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফাঁক রয়েছে উল্লেখ করা হয় বিশ্বব্যাংক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে। এতে বলা হয়, এটি একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার ‘মিস ম্যাচ‘ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আগের সরকার চলমান অর্থবছরের বাজেটে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। তবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, লক্ষ্যের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম হবে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি কমে গেলে তা হবে কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম। এর আগে করোনা মহামারির মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।