বাংলাদেশ হতে প্রবাসে কাজের সন্ধানে যাবার খরচ উপমহাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার কর্মীরা মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে বিদেশে যেতে পারেন, কিন্তু বাংলাদেশিদের খরচ করতে হয় কয়েক লক্ষ টাকা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই অর্থ তারা সুদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধার করে নেন।
অনেক সময় কর্মীদের একটা অংশকে বিভিন্ন কারণে আয়-উপার্জন ছাড়াই দেশে ফেরত আসতে হয়। করোনা মহামারির পর হতে প্রতি মাসে প্রায় এক লক্ষ কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন।আবার দীর্ঘদিন পর ফেরত আসা প্রবাসীরা দেশে ফিরে এলাকায় বিভিন্নভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন। কেও দোকান দেন, কেও ছোট কারখানা স্থাপন করেন, কেওবা ব্যবসায় নামেন। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল গড়বার উদাহরণও মেলে। এইভাবে তারা এলাকার অর্থনীতিকে জোরদার করে থাকেন। কিন্তু সেই একই মানুষরা যদি ব্যর্থ হয়ে ফেরেন, তখন তাদের দেখিবার কেও থাকে না।
দেশ যদি প্রবাসীদের পাঠানো ডলারের কারণে বিপুলভাবে উপকৃত হয়ে থাকে, তবে তাদের মধ্যে যারা দুর্ভাগ্যে নিপতিত হন, তাদের বেলায় কেন উদাসীন থাকবে? তাদের ব্যাপারে সরকার এবং বিশেষ করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অবশ্যই দায়িত্ব রয়েছে।এছাড়া যেসব নারী কর্মী প্রবাসে যৌন ও অন্য ধরনের নির্যাতনের শিকার হন, তাদের উদ্ধার করাও সরকারের দায়িত্ব, দূতাবাসের দায়িত্ব। তবে জরুরি হল, শ্রমিক আমদানিকারী দেশের সাথে এই ব্যাপারে চুক্তি করা যে, শ্রমিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার নিবে। ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এই ধরনের চুক্তির ব্যাপারে পথপ্রদর্শক।
আমরা আশা করিব, বাধ্য হয়ে ফেরত আসা শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার পদক্ষেপ নেবেন।