তুরস্ক থেকে গ্রিসে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে সাগরকে জঙ্গলে একা ফেলে চলে যান দালাল ও সঙ্গীরা। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন বরিশালের সাগর খান নামের এক অভিবাসনপ্রত্যাশী। প্রায় দেড় মাস আগে তুরস্ক থেকে গ্রিসে উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।
তার সঙ্গীরা গ্রিসে পৌঁছালেও সাগরের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তার পরিবার ও স্বজনরা।
নিখোঁজ যুবক সাগর বরিশালের মুলাদী থানার সফিপুর এলাকার সেলিম খানের পুত্র।
জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে প্রায় ৮ বছর আগে প্রথমে ওমানে পাড়ি জমান সাগর খাঁন। সেখানে দীর্ঘদিন থাকার পর স্বপ্ন দেখেন ইউরোপে প্রবেশের। এক দালালের সঙ্গে চুক্তি করে বিভিন্ন পথে ইরানের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রায় দুই বছর আগে তুরস্ক পৌঁছান। স্বপ্ন ছিল ইউরোপ যাওয়ার। ইউরোপ প্রবেশ করতে প্রথমেই গ্রিস যেতে হয়। তাই তুরস্কে থাকা মাদারীপুর এলাকার এক দালালের সঙ্গে চুক্তি করেন গ্রিসে প্রবেশের।
নিখোঁজের চাচা রবিউল খাঁন সানাউল বলেন, বিদেশে পাড়ি দেওয়ার পরই সাগরের বাবা-মারা যান। এরপর সে অনেকটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সাগর ওমান থেকে তুরস্কে গিয়ে মাদারীপুরের মোবারক নামের এক দালালের সঙ্গে চার লাখ টাকা দিয়ে চুক্তি করে গ্রিসে যাওয়ার জন্য। চুক্তি অনুযায়ী দালালকে সেই টাকাও পরিশোধ করে সাগর।
‘টাকা পাওয়ার পর দালালরা তাকে গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ গেমে নিয়ে যায়। সাগর বাড়িতে সর্বশেষ ওই মাসের ১৬ তারিখ কল দিয়ে জানিয়েছিল তাকে গেমে নিয়ে যাবে ১৮ তারিখ। এরপর থেকেই তার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’
রবিউল খাঁন বলেন, ভাতিজার খোঁজ না পেয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। ওই পোস্টের সূত্র ধরে এক যুবকের সঙ্গে কথা হয়। যুবক জানিয়েছে সেও ছিল গেমে এক সঙ্গে। দালালরা ২৪ ঘণ্টা হাঁটলেই গ্রিসের সেলোনিকা পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছিল অনুপ্রবেশকারীদের। কিন্তু টানা চারদিন এক সঙ্গে হাঁটার পর জঙ্গলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে সাগর। সে আর হাঁটতে পারেনি। এমনকি উঠে দাঁড়াতেও পারেনি।
‘তাই তাকে জঙ্গলে রেখেই চলে যায় দালাল ও সঙ্গীরা। তারা সবাই গ্রিসে গিয়ে পৌছেঁ গেছে, কিন্তু সাগর রয়ে গেলো জঙ্গলেই। এরপর আর কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি সাগরের পরিবার। সে কোথায় আছে, কি করছে বা কেমন আছে? কোনো হদিস মিলছে না। স্বজনরা কোনোভাবেই সাগরের সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তার পরিবারের লোকজন।