ভারতের ম্যাঙ্গালোরে অবস্থিত কেএমসি হসপিটাল’য়ের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রমোদ কুমারের ভাষায়, “বয়স ত্রিশের পর থেকে ত্বকের বিশেষ করে মুখের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দেয়। এইসময় বসয়ের ছাপ ও বলিরেখা বাড়ে।”
ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “সঠিক পরিচর্যা ও সচেতনতার মাধ্যমে বয়সের এই গতি ধীর করা যায়।”
সূর্য থেকে সুরক্ষিত থাকা
সূর্যরশ্মি ত্বক মসৃণ ও কোমল রাখতে সহায়ক উপাদান কোলাজেন ও ইলাস্টেনের ক্ষতি করে। এর ফলে ত্বক ঝুলে যায় ও বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ডা. কুমার বলেন, “প্রতিদিন ত্বক উপযোগী ২০ বা তার বেশি এসপিএফ যুক্ত সানব্লক বা সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার ত্বকের বয়সের ছাপ ধীর করে। রোদ বা মেঘ যেমন আবহাওয়া থাকুক না কেনো বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। তবে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রোদে থাকা দেহের ভিটামিন ডি’য়ের ঘাটতি দূর করে।”
ত্বক আর্দ্র রাখা: সুষ্ঠু আর্দ্রতা সুস্থ ত্বকের লক্ষণ। ত্বকের নিয়মিত ও পরিমাণ মতো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার বয়সের ছাপ ধীর করে।
ডা. কুমার প্রতিদিন আবহাওয়া ও দেহের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দেন।
তার মতে, “দৈনিক দুই লিটার পানি পান করা উপকারী।। পানি পানের অভ্যাস শরীর আর্দ্র রাখে, বিপাক বাড়ায় ও ত্বক সুন্দর রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও ত্বকে পানি ধরে রাখতে সঠিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি।”
এছাড়াও, ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে উন্নত ফেইস ওয়াশ ও স্ক্রাব ব্যবহার করুন। যা ত্বকের জন্য কোমল উপকারী হয়। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে রেটিনল ভিত্তিক লোশন ও ক্রিম ব্যবহার ত্বকের ‘কোলাজেন ফাইবার’ সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।
সঠিক পুষ্টি গ্রহণ
শরীরের পাশাপাশি ত্বকের সুস্থতাও নির্ভর করে খাদ্যাভ্যাসের ওপরে। পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান গ্রহণ ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সবজি থেকে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায়। সালাদ বা রান্না করে খাওয়া উপকারী। তবে কোনো সবজি অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। তাই সব মিলিয়ে এক সঙ্গে রান্না করে খাওয়া ভালো।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
ডা. কুমার ত্বক সুস্থ রাখতে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করার পরামর্শ দেন-
• চিনি, প্রক্রিজাত ময়দা ও দুধ-জাতীয় খাবার কম খাওয়া।
• সুস্থ থাকতে শরীরচর্চা করা। এতে মন, শরীর ও ত্বকের তারুণ্য বৃদ্ধি পায়।
• ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকা। কেননা এগুলো কোলাজেন ও ইলাস্টেনের পরিমাণ কমায়।
• মানসিক চাপ দ্রুত বয়সের ছাপ স্পষ্ট করে তোলে। তাই নিজেকে মানসিক চাপ ও হতাশা থেকে দূরে রাখা বয়সের ছাপ ও বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে।
• ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে বয়সের ছাপ পড়ার আগেই তা ধীর করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।