আমাদের পারিবারিক বন্ধন ও পারিবারিক ঐতিহ্য সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত। সেই পারিবারিক পরিবেশ আজ অনেকটাই শিথিল। যেভাবেই হোক কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারের মাধ্যমে গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সতর্ক রয়েছে।
শনিবার তেজগাঁও এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘কিশোর গ্যাং বৃদ্ধির কারণ’ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, আমরা যা করতে পারিনি তা- এই প্রজন্মের সন্তানদের মধ্যদিয়ে দেখতে চাই। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে কোনো লজ্জাজনক পরিবেশ তৈরি না করে, সেদিকে বাবা-মাসহ সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে। পারিবারিক বন্ধনের অভাবে যাতে শিশু-কিশোররা বিপথে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। প্রযুক্তি যাতে কিশোর ও তরুণদের বিপথে না নেয়, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধ করতে হবে। তবে প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে দিলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এর ভালো দিকটা গ্রহণ করে মন্দ দিকটা পরিহার করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করে এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে কিশোরদের সুস্থ জীবন সুনিশ্চিত করতে হবে।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, আমাদের একটি বড় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা ছিল- জঙ্গিবাদ, জলদস্যু ও বনদস্যুদের ভয়ঙ্কর আধিপত্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতায় বর্তমানে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। জঙ্গিবাদ দমন হয়েছে, জলদস্যু ও বনদস্যুরা আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল ধারায় ফিরে এসেছে। একইভাবে গ্যাং কালচারের সঙ্গে যুক্ত কিশোরদেরকেও আমাদের সুস্থ সমাজে ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের কারণে কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। টিকটকসহ বিতর্কিত বিভিন্ন অ্যাপসের অপব্যবহারের কারণে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে অনেক কিশোরী-তরুণীকে। আর্থিক প্রলোভনে ফেলে এসব কিশোরীদের তারকা বানানোর স্বপ্ন দেখানো হয়। নীচু মানের ও অশালীনতাপূর্ণ কন্টেন্টের বেশি ব্যবহার দেখা যায় টিকটক, লাইকি, ইমোসহ বেশ কয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সুস্থ বিনোদন ও সামাজের ইতিবাচক চিত্র উপস্থাপনের জন্য এসব অ্যাপসগুলো তৈরি হলেও ব্যাপকভাবে এর অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্করাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
প্রতিযোগিতায় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বিতার্কিকরা সমান নম্বর পাওয়ায় উভয় দলকে যৌথভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কামান্ডার খন্দকার আল মঈন এবং র্যাব-২ এর সিইও লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত। এ ছাড়া বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এসএম মোর্শেদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ তানজিনা শারমিন, সাংবাদিক এসএম ফয়েজ ও সাংবাদিক জামিউল আহসান শিপু।









