ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শারীরিক সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গত আট বছরের মধ্যে এই প্রথম তাকে হাসপাতালে রাত কাটাতে হয়েছে।
হাসপাতালে যাওয়ার আগে ৯৫-বছর বয়সী রানিকে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়েছে। যোগ দিতে হয়েছে একের পর এক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত অক্টোবর মাস জুড়ে রানি যেসব কাজে ব্যস্ত ছিলেন তার কয়েকটি চিত্র তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।
১লা অক্টোবর
রানি এলিজাবেথের জন্য মাসের শুরু হয়েছিল স্কটল্যান্ডের ব্যালমোরাল প্রাসাদে। সেখানে যুবরাজ চার্লসকে নিয়ে তিনি বেশ কিছু গাছ রোপণ করেন।
যুক্তরাজ্যের জনগণ নিজের বাড়িতে যেন বেশি করে গাছ লাগায় সেই লক্ষ্যে তারা শুরু করেছেন ‘গ্রিন ক্যানোপি’ (সবুজ আচ্ছাদন) নামে এক বিশেষ কর্মসূচি।
রানির সিংহাসনে আরোহণের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীকে সামনে রেখে তারা এই প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন।
ব্যালমোরাল প্রাসাদের ওই অনুষ্ঠানের সময় রানি ও যুবরাজ স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলিত হন।
২রা অক্টোবর
পরের দিন রানি চলে যান প্রায় ১০০ মাইল দূরে এডিনবরা শহরে। সেখানে তিনি স্কটিশ পার্লামেন্টের ৬ষ্ঠ অধিবেশন উদ্বোধন করেন।
এই অনুষ্ঠানটিতে রানি প্রথমবারের মতো তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপকে ছাড়াই অংশ নেন। প্রিন্স ফিলিপ এবছর ৯৯-বছর বয়সে মারা গেছেন।
৬ অক্টোবর
এর কিছুদিন পর রানি এলিজাবেথ বেলিজ এবং গ্রিসের কূটনীতিকদের সঙ্গে ভিডিওর মাধ্যমে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মিলিত হন।
একই দিনে তিনি উইন্ডসর প্রাসাদে ক্যানাডার গোলন্দাজ বাহিনীর একটি রেজিমেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি ছিল ওই রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার ১৫০তম বার্ষিকী।
এদিনই তিনি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেন।
৭ অক্টোবর
এদিন রানি ফিরে আসেন লন্ডনে। এসময় তিনি বাকিংহাম প্রাসাদে কমনওয়েলথ গেমসের ব্যাটন হস্তান্তর করেন। রানি কমনওয়েলথ-এর প্রধান।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর এটি ছিল বাকিংহাম প্রাসাদের প্রথম কোনো রাজকীয় অনুষ্ঠান। এসময় রানির সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তার ছোট ছেলে প্রিন্স এডওয়ার্ড।
১২ অক্টোবর
এর কিছুদিন পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবি গির্জায় রয়্যাল ব্রিটিশ লিজিওনসের প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী পালন করেন।
এসময় লাঠিতে ভর করে চলা রানির সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে প্রিন্সেস অ্যান, যাকে প্রিন্সেস রয়্যাল বলে ডাকা হয়।
১৩ অক্টোবর
এদিন রানি বাকিংহাম প্রাসাদে পিয়ানোবাদক ডেম ইমোজেন কুপারকে স্বাগত জানান। তাকে তিনি ২০১৯ সালের সঙ্গীতে রানির পদক প্রদান করেন।
একই দিনে তিনি আরো তিনটি সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
১৪ অক্টোবর
এদিন রানি এলিজাবেথ চলে যান ব্রিটেনের একটি প্রদেশ ওয়েলসে। সেখানে তিনি ওয়েলসের সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন।
গত পাঁচ বছরর মধ্যে এটাই ওয়েলসে রানি প্রথম সফর। ভাষণে তিনি তিনি করোনা মহামারি মোকাবেলায় ওয়েলসের জনগণের সাহসিকতার প্রশংসা করেন।
এই অনুষ্ঠানেই তাকে দৃশ্যত বলতে শোনা যায়, যারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে শুধু ‘কথা বলে’ কিন্তু কোন ‘কাজ করে না’ তাদের নিয়ে তিনি বিরক্ত বোধ করেন।
এরপর শনিবার তিনি ফিরে আসেন ইংল্যান্ডে। ওই দিন তিনি বার্কশায়ার অঞ্চলের অ্যাসকটে বিখ্যাত ঘোড়দৌড় অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
নিউজিল্যান্ডের নবনিযুক্ত গভর্নর-জেনারেল ডেম সিনডি কারোর সঙ্গে তিনি এক ভার্চুয়াল সাক্ষাতে মিলিত হন। গভর্নর-জেনারেল নিউজিল্যান্ডে রানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন।
১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার তিনি দুটি ভার্চুয়াল সৌজন্য সাক্ষাতকারে মিলিত হন। প্রথমটি জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। অন্যটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির সঙ্গে।
সেদিনই সন্ধ্যায় উইন্ডসর প্রাসাদে তিনি এক সংবর্ধনায় যোগদান করেন। গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট সামিটের এই অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিলিওনেয়ার বিল গেটসসহ বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।