যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও সাইনবোর্ড রয়েছে। তবে বাংলা ভাষায় স্টেশনের নাম লেখা নিয়ে বিরোধিতা করেছেন ব্রিটিশ সাংসদ রুপার্ট লোয়ের। এ নিয়ে ব্রিটিশ সাংসদের পক্ষে দাঁড়ালেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের সাইনবোর্ডের নাম বাংলায় লেখা নিয়ে রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেছেন রুপার্ট লোয়ের।
রুপার্টের এই মন্তব্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও এক্সের মালিক ইলন মাস্কও এই পোস্টে মন্তব্য করেন। পোস্টটি শেয়ার করে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘হ্যাঁ’।
ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি ব্রিটেনের ডানপন্থি রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকের নীতিমালার বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তিনি রিফর্ম ইউকের বর্তমান নেতা নাইজেল ফারাজকে সরিয়ে তার জায়গায় রুপার্ট লোয়েরকে বসানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি লোয়ের পোস্টকে সমর্থন করেন।
রুপার্টের পোস্টের পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী তার বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেছেন, যুক্তরাজ্যে শুধু ইংরেজি ভাষাতেই সাইনবোর্ড থাকা উচিত। অন্যদিকে, অনেকে এর বিরোধিতা করে বলেছেন, একটি বহুজাতিক ও বৈচিত্র্যময় সমাজে বিভিন্ন ভাষায় সাইনেজ থাকা দোষের কিছু নয়।
এনডিটিভির বলছে, লন্ডনের ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন অথরিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম লেখা হয়েছিল ২০২২ সালে। বর্তমানে এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষই হলো বাংলাদেশি। ইংল্যান্ডের অধিকাংশ বাংলাদেশি থাকেন এই অঞ্চলে। এই অঞ্চলে আগে থেকেই বহু দোকানের নাম রয়েছে বাংলা ভাষায়। এই আবহে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম যাতে বাংলাতেও লেখা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলা সাইনবোর্ডের প্রশংসা করেছেন। ২০২২ সালের মার্চে এক্সে তিনি লিখেছিলেন, ‘গর্বের বিষয় যে লন্ডন টিউব রেল হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে বাংলা ভাষাকে সাইনবোর্ডের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি আমাদের ১ হাজার বছরের পুরনো ভাষার ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক গুরুত্ব এবং শক্তির প্রতীককে তুলে ধরে।’
পরে আরেক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, প্রবাসীদের উচিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বার্থে একসাথে কাজ করা উচিত। এটি আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের বিজয়।