যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিজ বাড়িতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম উইন রোজারিও।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে নিউইয়র্কের ওজন পার্কের ১০১ এভিনিউয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, ওই তরুণ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং গুলিতে নিহত হওয়ার আগে সাহায্যের জন্য ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিলেন।
পুলিশ জানায়, বাড়িতে পৌঁছে উইন রোজারিওকে কাঁচি হাতে দেখতে পান তারা। এ সময় এক জোড়া কাঁচি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে তেড়ে যান উইন। এরপরই তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। এতে তার মৃত্যু হয়।
যদিও নিহত তরুণের ১৭ বছর বয়সী ভাই উশতো রোজারিও এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং তিনি পুলিশি বিবরণের বিরোধিতা করেছেন। উশতো জানায়, তার মা এনকাউন্টারের পুরো সময়জুড়ে তার ভাইকে কোলে ধরে রেখেছিলেন।
উশতোর মতে, তার মা উইনকে আটকাচ্ছিলেন; এমন সময় পুলিশের গুলি করার কোনো দরকার ছিল না।”তিনি বলেন, “এভাবে গুলি করা ছিল অপ্রয়োজনীয়। আমি মনে করি না কেবল একটি কাঁচি দুজন পুলিশ অফিসারের জন্য হুমকি ছিল।”
তবে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টহল প্রধান জন চেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “সেখানে যাওয়ার পর রোজারিওকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে তিনি একটি ড্রয়ার থেকে কাঁচি বের করে পুলিশের দিকে ধেয়ে আসেন। তখন রোজারিওর ওপর গুলি করা হয়। আত্মরক্ষার জন্য এর বিকল্প ছিল না।”
রোজারিওকে কতবার গুলি করা হয়েছে তা জানায়নি পুলিশ। রোজারিওর পরিবারের দাবি, তাকে ছয়বার গুলি করা হয়েছে।
এই পুরো ঘটনাটি পুলিশের ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে বলে জানান চেল। যদিও ফুটেজটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
উশতো এবং উইনের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও জানান, তাদের পরিবার ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে আসে। উইনের স্বপ্ন ছিল মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগদান করা। তবে গ্রিন কার্ড পেতে বিলম্বের কারণে তার সেই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে ছেলেকে হত্যার অভিযোগ করেন তিনি।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, নিউইয়র্কে গত দুই মাসে পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তৃতীয় ব্যক্তি হচ্ছেন রোজারিও। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা উইনের মৃত্যুর ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। বাংলাদেশে ইয়েন রোজারিওর বাড়ি গাজীপুরের পুবাইলে।