শুক্রবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. অস্ট্রেলিয়া
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আফ্রিকা
  6. আবহাওয়া
  7. আমেরিকা
  8. আয়ারল্যান্ড
  9. ইউক্রেন
  10. ইউরোপ
  11. ইতালি
  12. কানাডা
  13. খেলাধুলা
  14. গ্রাম বাংলা
  15. চিত্র বিচিত্র

রাজধানীতে আরও ৫ শতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ

প্রতিবেদক
Probashbd News
ডিসেম্বর ২৩, ২০২২ ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

Spread the love

গত ৮ জুন সকালে হাতিরঝিল পুলিশ প্লাজাসংলগ্ন গুলশান লিঙ্ক রোডের পাশ থেকে ডিবিসির সাংবাদিক আব্দুল বারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

তার বুকে ছুরিকাঘাত ও গলায় কাটা দাগ ছিল। পরনে ছিল শার্ট ও প্যান্ট। তার শরীর ছিল ভেজা। এ ঘটনায় তার বড় ভাই বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

একদিন পর মামলাটির তদন্ত পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। পুলিশ নিশ্চিত হন বারী নিজের গলায় নিজেই ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এক্ষেত্রে অন্তত ১৫০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। তার মোবাইল ফোনের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলে ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।

গত ৪ নভেম্বর বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ নিখোঁজ হন। ৭ নভেম্বর তার লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশ। এ ঘটনার তদন্ত শেষে র‌্যাব-পুলিশের পক্ষ থেকে আত্মহত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এক্ষেত্রে কয়েকশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করা হলেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ফারদিনের চেহারা স্পষ্ট নয়। তবে তার মোবাইল ফোন লোকেশন সেখানে থাকার কারণে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি আত্মহত্যা। তবে ফারদিনের বাবা কাজী নুরউদ্দিন রানা এটিকে আত্মহত্যা মানতে রাজি নন। এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হলে তিনি না রাজি আবেদন করবেন বলেও জানিয়েছেন।

ফারদিন নূর পরশের আত্মহত্যার বিষয়টি বুয়েটের ছাত্র ও তার পরিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর বুয়েটের ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল যান গোয়েন্দা কার্যালয়ে। সেখান থেকে বের হওয়ার পর তারা বিষয়টি গ্রহণযোগ্য বললেও কিছু গ্যাপ আছে বলে সাংবাদিকদের জানান।

শুধু এই দুটি ঘটনাই নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ মামলার তদন্তে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট এবং শেষ লোকেশন মামলা তদন্তে সহায়ক হয়ে উঠেছে। তবে প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাই প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে আনতে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্ভর ৫ শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সিসি মিডিয়া ফারুক হোসেন জানান, আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ডিএমপির উদ্যোগে ৬৭৫টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এতে কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি ডিএমপির আলোকচিত্র শাখাও নানাভাবে রাজধানীজুড়ে তৎপর থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে আরও নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন করে ৫ শতাধিক ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, অপরাধী শনাক্তকরণ ও ট্রাফিক মনিরটরিংয়ের লক্ষ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ও ব্যয়সাধ্য বিধায় ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রধান প্রধান রাস্তার প্রবেশ ও বাহির পথ লক্ষ্য করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এসব স্থানে ৬৭৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা সচল রয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সিসি ক্যামেরাগুলো কেনা হয়। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ক্যামেরাগুলো স্থাপন ও কনফিগারেশন করা হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডিএমপিকে অফিশিয়াল প্রজেক্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সূত্র মতে, অন্তত ১৫ বছর আগে রাজধানীর ৪৩টি পয়েন্টে মাত্র ১৮৫টি ক্যামেরা ছিল। পর্যবেক্ষণের জন্য আব্দুল গনি রোডে পুলিশের কমান্ড সেন্টারে একটি মনিটরিং কক্ষ খোলা হয়। পরে ক্যামেরাগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও প্রতিস্থাপন করা হয়নি। ক্যামেরাসংক্রান্ত একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১০ সাল পর্যন্ত চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। পরে ২০১২ সালে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার এবং বর্তমান সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের উদ্যোগে রাজধানীতে একটি সিসি ক্যামেরা প্রকল্প চালু হয়।

সম্পূর্ণ বেসরকারি অর্থায়নে ‘ল অ্যান্ড অর্ডার কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ বা এলওসিসি নামের একটি ট্রাস্ট গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে ট্রাস্টের অধীনে গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এবং ডিওএইচএস এলাকায় ১২শ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে গুলশানের ১০২ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ি থেকে ক্যামেরা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখানে একটি আধুনিক মনিটরিং সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে, যা সিসিটিভি মনিটরিং সেন্টার নামে পরিচিত।

সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য রাস্তার মোড়, ইন্টারসেকশন, প্রবেশ-বাহির পথ, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা-কেপিআই সংলগ্ন পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা চালু রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রাইম ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে ঢাকার সার্বিক নিরাপত্তা আরও ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আরও সিসিটিভি ক্যামেরা কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ২য় পর্যায়ে ঢাকায় প্রায় ৫শটি ক্যামেরা সংযোগ স্থাপন কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার বসানো হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা। ওই ক্যামেরায় স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম, ফেস ডিটেকশন (চেহারা চিহ্নিতকরণ), গাড়ির নম্বর প্লেট চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি বা এএনপিআরসহ অন্তত ১১ ধরনের সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে। এই ক্যামেরা প্রকল্পের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে ডিজিটাল টহল নিশ্চিত করা। অর্থাৎ গভীর রাতেও নির্জন রাস্তা থাকবে পুলিশের নজরদারিতে। ক্যামেরায় চেহারা শনাক্তের প্রযুক্তি থাকায় অপরাধী এবং পলাতক আসামিদের সহজেই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

চুরি এবং ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে না। এছাড়া থাকবে স্বয়ংক্রিয় শব্দ চিহ্নিতকরণ ব্যবস্থা। রাজধানীর কোথাও কোনো শব্দ হলে তাৎক্ষণিকভাবে শব্দের বিস্তারিত তথ্যসহ কন্ট্রোলরুমে সিগন্যাল চলে যাবে।

ফলে পুলিশের ভাষায় ‘শুটিং ইনসিডেন্ট’ বা গোলাগুলির ঘটনা ঘটলে দ্রুততম সময়ে তথ্য পাবে পুলিশ। এমনকি কতদূরে গুলি হয়েছে এবং কী ধরনের অস্ত্রের গুলি, তাও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ক্যামেরায় থাকবে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম। সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা বস্তু ক্যামেরায় ধরা পড়ামাত্র সংকেত বেজে উঠবে।

সর্বশেষ - প্রবাস

Translate »