সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সিনিয়র সদস্য মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অবদান ভোলার নয়। প্রয়াত নেতাদের আদর্শ মাথায় রেখে দল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেহেতু জনগণের সংগঠন, সাজেদা চৌধুরীর মতো অসংখ্য নিবেদিত নেতাকর্মী এ সংগঠনের হাল ধরেছে বলেই চরম দুঃসময়ে এই সংগঠন দিক হারায়নি, নীতি আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গেছে। আশা করি আমাদের যারা নেতা আছেন তারা প্রয়াত নেতাদের আদর্শ মাথায় রেখেই এগিয়ে যাবেন, এটাই আমি চাই।
রোববার (৩০ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং মহিলা আসন-১৯ এর নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ এ্যানী রহমানের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
স্পিকার এ সংক্রান্ত শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে জাতীয় সংসদ তা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করে। পরে এক মিনিট নীরবতা ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ রুহুল আমিন মাদানি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের যে অবদান রেখে গেছেন তা ভোলার নয়। চরম দুর্দিনে আওয়ামী লীগের হাল ধরা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেছেন। বারবারই আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে, পাকিস্তানের সময়, মুক্তিযুদ্ধের সময়। সাজেদা চৌধুরী নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্যাম্পের নেতৃত্বে ছিলেন যেমন তেমন মুক্তিযোদ্ধাদেরও সংগঠিত করেছেন, খোঁজখবর নিয়েছেন।
‘স্বাধীনতার সংগ্রামে যেমন তার অবদান রয়েছে, আমাদের জাতীয় জীবনেও অবদান রয়েছে তার। ১৫ আগস্টের পর আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর অকথ্য নির্যাতন নেমে আসে। সাজেদা চৌধুরীও এর শিকার। জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেপ্তার করে। তার অপারেশন হয়েছিল, গায়ে জ্বর ছিল, এই অবস্থায় জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। মতিয়া চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করে। তিনিও অসুস্থ ছিলেন। তাদের ডিভিশনও দেয়নি। সাধারণ কয়েদির মতো জেলে ফেলে রাখে। এদেশের প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রামে সাজেদা চৌধুরী সব সময় সামনে থাকতেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি দিল্লি গিয়েছিলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমরা তাকে ফুফু বলে ডাকতাম।’
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান আইন করেছিল পার্টির রেজিস্ট্রেশনে কারও নাম দেওয়া যাবে না। কিন্তু এব্যাপারে সাজেদা চৌধুরী অটল ছিলেন। তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু ছাড়া পার্টি হয় না। আমাদের দলের মধ্যেও কারো কারো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। তিনি কিন্তু এ ব্যাপারে অটল ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান তাই এই আইন করেছিল।
তিনি বলেন, আমি দেশে আসার পর তাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সব কাজ তিনি সুচারুভাবে করতেন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর তাকে বন ও পরিবেশ বানিয়েছিলাম। সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হয়েছে, এর অবদান সাজেদা চৌধুরীর। তিনি সুন্দরবনকে সাজিয়েছিলেন। তিনিও পুরস্কার পেয়েছিলেন।