২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম নোয়াখালীর ৪ রাজনৈতিক অঙ্গন। আসন্ন নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ আসনে কে হবেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। নোয়াখালীবাসীর দুর্ভাগ্য যে তারা মরহুম আবদুল মালেক উকিল এর পরে কোনো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব পাননি। ২০০১ সাল পর্যন্ত ্আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘদিন এই আসনটিতে সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপি মনোনীত একজন নেতা। জেলা শহর মাইজদীর জহুরুল হক মিয়ার গ্যারেজ সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। মাঝে মাঝে বাসা ভাড়া দিতে পারতেন না, কখনও কখনও ছেলে মেয়ের স্কুলের বেতনও পড়তো বাকি। এমপি হওয়ার পর তিনি হয়ে গেলেন রাতারাতি কোটিপতি। এখন তিনি ক্ষমতায় না থাকলেও বিত্ত বৈভবের অভাব নাই।
তার পর এর পর শুরু হলো আওয়ামীলীগের একজন চৌধুরীর যুগ। এমন লুটপাট আর দুর্নীতির যুগ নোয়াখালীর ইতিহাসে দেখা যায়নি। নোয়াখালীতে এখন খাস জমি বলে কিছু নাই। এমন কোনো পদ-পদবী নাই যেখানে ঘুষ না দিতে হয়েছে এমপিকে। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, পরিবহন, সাপ্লাই, সর্বত্রই এখন এক দানবীয় লুটপাটের উৎসব।
চৌধুরী সাহেব ব্যবসা করতেন চট্টগ্রামে। একসময় নোয়াখালী আসতেন বাসে চেপে। তারপর নিজস্ব গাড়িতে। এমপি হওয়ার পর তিনি আসেন হেলিকপ্টারে চড়ে। শুধু তিনি নন। তার স্ত্রী, ভাগনেসহ অনেকেই জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। তার ছেলেকে তিনি এখন থেকেই গড়ে তুলেছেন গডফাদার হিসেবে। নোয়াখালীর রাজনৈতিক গুম, খুন, হামলা মামলার মাস্টার মাইন্ড এই এমপি পুত্র।
নোয়াখালী টাউন হল এবং পাবলিক লাইব্রেরির ওপরে একটি বহুতল বিশিস্ট মার্কেট করার অভিলাষ ছিলো চৌধুরী সাহেবের। স্থানীয়রা সেখানে বাধ সাধায় সমস্ত উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
নোয়াখালী সদর হাসপাতালে কাগজে কলমে বিভিন্ন দ্রব্যাদি শুধু সাপ্লাইএর তালিকাই শুধু পাওয়া যায়। টাকা চলে যায় এমপির পকেটে।
এমপি হওয়ার লাইনে মালেক উকিলের ভাই এর এক ছেলে যিনি ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান । ক্ষমতা দেখাতে পালেন দুর্ধষ একটি সন্ত্রাসী দল। বর্তমান মেয়রও ছিলেন একসময় কুখ্যাত সন্ত্রাসী। অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা গুণতে বাসায় রাখেন টাকা গোনার মেশিন।নোয়াখালী পৌর হলকে ভেঙ্গে ইতোমধ্যেই তিনি গড়ে তুলছেন মার্কেট। পৌরসভার উন্নয়নে তিনিই অর্থ বরাদ্দ দেন আবার ঠিকাদার হয়ে নিজেই করেন কাজ। এমন তুঘলকি কারবারও দেখতে হলো নোয়াখালীর মানুষকে।
সামনের নির্বাচনে তাহলে কাকে দেয়া যায় দলীয় মনোনয়ন? নেত্রী শেখ হাসিনা কি পারবেন সে রকম একজন শিক্ষিত, সৎ ও নির্ভিক প্রাথীকে প্রার্থী করতে? নাকি তিনি ঘুরে ফিরে আরেকজন লুটেরার হাতেই টিকেট তুলে দেবেন। সেটাই এখন দেখার বিষয়।