দিল্লির লালকেল্লায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে হয়েছে বলে ধারণা করছে দেশটির নানা সংস্থা। সিসিটিভি ফুটেজে আত্মঘাতী ব্যক্তিসহ একটি গাড়িকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৯ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের আগে ও পরে সিসিটিভি ফুটেজ ও কিছু ছবি প্রকাশ পেয়েছে, যাতে দেখা গেছে সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ (নম্বর: HR 26CE7674) গাড়িটি ঘটনাস্থলে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পার্ক করে ছিল।
গাড়িটি বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে পার্কিং এলাকায় প্রবেশ করে এবং ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে বের হয়। এক মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপে গাড়িটিকে বাদারপুর সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তদন্তকারীরা ওই পথের পুরো রুট পর্যালোচনা করছেন।
একটি ছবিতে দেখা গেছে, গাড়িটি পার্কিংয়ে ঢোকার সময় জানালার পাশে সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলাকারীর হাত। আরেক ছবিতে দেখা গেছে, গাড়িচালক নীল ও কালো টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় রয়েছেন। তৃতীয় ছবিতে গাড়িটিকে ব্যস্ত সড়কে চলতে দেখা যায়।
গাড়িটি পার্ক করা অবস্থায় ওই ব্যক্তি এক মুহূর্তের জন্যও বাইরে বের হননি। এই দৃশ্য থেকেই আত্মঘাতী হামলা হিসেবে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থারা।
বিস্ফোরণটি ঘটে সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে, লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল বিকৃত দেহাবশেষ ও ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। ভয়াবহ দৃশ্যে হতভম্ব হয়ে যায় স্থানীয় মানুষজন। বিস্ফোরণের পরপরই বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী এলাকা ঘিরে ফেলে এবং আহতদের দ্রুত লোক নায়েক জয়প্রকাশ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে, দিল্লি পুলিশ ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে তদন্ত করছে। প্রাথমিক ফরেনসিক রিপোর্ট ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইউএপিএ আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, রাজধানী দিল্লিসহ মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, জয়পুর, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও বিহারে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে, দিল্লি সংলগ্ন হরিয়ানার ফরিদাবাদে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। তদন্তকারীরা এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
জানা গেছে, বিস্ফোরিত হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি ছিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা চিকিৎসক ড. উমর মোহাম্মদের মালিকানাধীন। তিনি একটি “হোয়াইট কলার টেরর মডিউল”-এর সদস্য ছিলেন। মডিউলের অপর দুই সদস্য ড. মুজাম্মিল শাকিল ও ড. আদিল রাথার। তাদেরকেই হরিয়ানার ফরিদাবাদে বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল।











