নিজের দেশ থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশের কিছু মানুষকে বেছে নিতে হয় প্রবাস। কারন আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমান কর্মসংস্থান ও শিক্ষা সচেতনতার প্রচুর অভাব। তাই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় হিসাবে প্রবাস জীবন বেছে নিতে বাধ্য। এই প্রবাসীদের অবস্থা অনেকটা বনবাসীদের মতো।
প্রবাসীরা বঞ্ছিত রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে, শুধু মাত্র পাসপোর্ট দিয়ে বিমান বন্দরের সীমানা পার করে দিলেই আর এদের খবর নেওয়ার কেউ থাকেনা। সেই সাথে দেশে বসবাসকারীদের মনেও খুব একটা শ্রদ্ধা নেই প্রবাসীদের জন্য। কিন্তু এই প্রবাসীরাই নিজের জীবনের সব সাদ-আহ্লাদ বাদ দিয়ে নিজের শ্রম দিয়ে যাচ্ছে দেশের জন্য।
একদিকে যেমন দেশের জন্য রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে, অন্যদিকে এক একজন প্রবাসী এক একটি পরিবারকে সচ্ছল ভাবে চালিয়ে নিচ্ছে।
এই প্রবাসীরা আমাদের জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করে সেটা অনেকের অজানা।
প্রবাসীদের ত্যাগ রক্ত ঘামে ঘুরছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকা কারণ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এর উপরেই এখনো দাঁড়িয়ে আছে ভর করে এই বাংলাদেশের অর্থনীতি, কিন্তু আমরা প্রবাসীদের বুকের উপরে দাঁড়িয়ে থেকেও প্রবাসীদের মূল্যায়ন করতে শিখিনি, এই জাতির কাছে আমার প্রশ্ন থেকে যায় প্রবাসীরা আর কতবার ঠকবে ? আর কত জীবন দিবে ? আর কত অবহেলিত হবে ? জবাব দিতে পারবেন !
আমরা প্রবাসীদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে রাজী নই। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকে তাদের তো কোন দাম ই নাই। কথায় কথায় আমরা বলে ফেলি “দুবাই অলার বেইল (ভ্যালু) নাই”।
কখনো কি কেউ এই ব্যাপারে ভেবেছিলাম ??
কখনো কি তাদেরকে সম্মান করেছি ??
কিন্তু একজন প্রবাসী হাজারবার মরে। কখনো নিজের অস্তিত্বের কাছে, কখনো নিজের মনের কাছে। অথচ প্রবাসীরাও দেশের সৈনিক। আসুন আমরা প্রবাসীদের প্রতি অবহেলার দৃষ্টিতে না তাকিয়ে তাদের দিকে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেই। যে যেই অবস্থায় থাকুক না কেন প্রবাসীরা যখন দেশে আসে তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, তাদেরকে সু নজর ও আপন জনের দৃষ্টিতে দেখতে হবে, কারণ প্রবাসীরা প্রতি সময়েই দ্বারে দ্বারে অবহেলিত হয়! সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি সমাজ-পরিবারে তাদেরকে সুদৃষ্টি-সুনজরে দেখতে হবে, সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে যাতে তাদের জীবন সুন্দর হয় এবং তারা আনন্দিত হয়। দেশের মানুষের আন্তরিকতা এবং রাষ্ট্রের সম্মানের প্রকাশ থাকতে হবে প্রবাসীদের প্রতি, তাহলেই এই রেমিটেন্স যোদ্ধারা আরো হয়ে উঠবে আনন্দিত এবং তৃপ্ত, দেশের জন্য পরিবারের জন্য সমাজের জন্য কাজ করে যেতে পারবে নিরলস ভাবে, প্রবাসীদের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিন।