ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর, তার স্ত্রী সুলতানা আক্তার শিউলি এবং চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর এর বড় ভাই মৃত আবুনূর মোতাহারুল জব্বার চৌধুরীর স্ত্রী আফরোজ আক্তার ঝর্ণার নামে সাধারণ ডায়রী করেছেন চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর এর আমেরিকা প্রবাসী বোন মোর্শেদা চৌধুরী ঝুমুর । গত ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও সদর থানায় অনলাইনে একটি জিডি করা হয়। যার ডায়রী নং নাম্বার ১৬৪২।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন সাধারণ ডায়রীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান সাধারণ ডায়রীটি পেয়েছি বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
সাধারণ ডায়রীতে মোর্শেদা চৌধুরী ঝুমুর বলেন জেলার মথুরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার চৌধুরী এবং মৃত মাহাবুবু বেগম চৌধুরীর কন্যা তিনি। তিনি ১৯৯৪ সাল হতে আমেরিকা প্রবাসী । অভিযোগে তিনি বলেন, আমার পিতা আব্দুল জব্বার চৌধুরী জেলায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলায় এবং দিনাজপুর জেলায় শত শত কোটি টাকার সম্পদ তার কর্মদ্বারা অর্জন করেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের জুন মাসে তার মৃত্যু হলে আমার বড় ভাই মৃত আবুনূর মোতাহারুল জব্বার চৌধুরীর ও ছোট ভাই চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর আমার পিতার সকল স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি ভোগ দখল করেন এবং করতে থাকেন ।যেখানে আমাদের বোনদের কোন কর্তৃত্ব ছিল না। আমাদের বোনদের হক, ন্যায্য পাওনা, হিস্যা অংশ হরণের উদ্দেশ্যে বোনদের অংশের সম্পত্তি কুক্ষিগত করে রাখেন।
অভিযোগে মোর্শেদা চৌধুরী ঝুমুর আরো বলেন, আমার ভাইদের স্ত্রীদ্বয় আমার পিতা-মাতার অনেক সম্পত্তি কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বাটোয়ারা না হওয়া সত্ত্বেও বিক্রয় করছে এবং ভাইদের কাছ থেকে নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। এমনকি আমার পিতা মরহুম আব্দুল জব্বার চৌধুরীর কন্যা সেজে আইন অমান্য করে নিজ পরিচয় গোপন করে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আমার মরহুম পিতার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করেছেন এবং করছেন। আমি যখন মাঝেমধ্যে দেশে আসি, আমার পিতার সন্তান হিসেবে আমার পিতার স্থাবর সম্পত্তিতে আমার আইনানুগত প্রতিষ্ঠিত নায্য হিস্যা/ অংশ দাবি করি তখনই আমার উপর আমার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী তিনজনই একত্রিত হয়ে আমার উপর আমানবিকভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে আক্রমণ চালায়।
এখন আমি বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে, আমাদের পৈত্রিক বাড়িতে আমাদের অন্যান্য বোনেরা আমাদের পিতা-মাতার স্থাবর সম্পত্তিতে আমার অংশ দাবি করলে এবং এ সকল বিষয়ে আলোচনা হলে ও আমার প্রসঙ্গ উঠলে চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর, তার স্ত্রীর শিউলি এবং আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আফরোজ চৌধুরী ঝর্ণা তিনজনেই আমাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। বলে আমি ঠাকুরগাঁয়ে এলে আমাকে ঠাকুরগাঁয়ে ঢুকতে দেয়া হবে না। আমাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করা হবে। এবং অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ ভাষায় উল্লেখিত তিনজনই গালিগালাজ করে চরিত্র হননের কাজে লিপ্ত হয়। তিনজনেই বলে আমাকে আমার পিতার বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হবে না। আর যদি আমি দেশে এসে বাড়িতে যেতে চাই তাহলে আমাকে মারধর করবে বলেও হুমকি প্রদান করছে। এছাড়াও আমার ভাই মেহেবুল্লা চৌধুরী আবু নুর ও আমার এক বোন নাজমুন নাহার চৌধুরী মনি উভয়ই একজোট হয়ে আবুনুর ঠাকুরগাঁও রোড মথুরাপুরস্থ আমার পিতার পৈত্রিক বাড়িসহ কিছু সম্পত্তি নাকি আমার অসুস্থ মায়ের কাছে এবং নাজমুন নাহার চৌধুরী মনি দিনাজপুর জেলা শহর চাওলিয়া পট্টির বাড়িটি বলপূর্ব সুকৌশলে আমার অসুস্থ মায়ের কাছে লিখে নিয়েছে এবং উপরের অভিযুক্ত তিন জনেই আমাকে আমার পিতা-মাতার সকল প্রকার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে রাজত্ব করছে।
মোর্শেদা চৌধুরী ঝুমুর সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন , আমি দেশে গেলে এবং নিজ পৈত্রিক বাড়িতে গেলে এবং আমার পিতা মাতার স্থাবর সম্পত্তিতে আমার ন্যায্য হিস্যা/ অংশ চাইতে গেলে আমি আমার নিজের জীবনের ও আমার পুত্র সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া সহ জীবন নাশের আশংকা এবং নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি প্রবাসে বসেই।যার ফলে আমার দেশে ফেরার সুদৃঢ় ইচ্ছা ও আকাঙ্খ থাকা সত্ত্বেও চরম উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছি। তাই আমার জীবনের ও আমার সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এবং আমার মরহুম পিতা মাতার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিতে আমার ন্যায্য হিস্যা বা অংশ প্রাপ্তির লক্ষে থানায় জিডি করেছি। ,আমি আমার মরহুম পিতা মাতার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিতে আমার অংশ আমাকে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে, ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে এবং আমার ও আমার পুত্র সন্তানের জন্য (জন্মসূত্রে আমেরিকান নাগরিক) সার্বিক নিরাপত্তা এবং উপরে উল্লেখিত অভিযুক্ত তিনজনের যেকোনো ধরনের হয়রানি নির্যাতনের কবল হতে রক্ষা করার জন্য দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অনুরোধ করলাম।
এ বিষয়ে চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর বলেন,এই অভিযোগগুলোর সাথে চুল পরিমান
আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই । সে দেশে ( মোর্শদা চৌধুরী ঝুমুর) কখন আসে কখন যায় আমি নিজেও জানিনা। বাবার জমি থেকে সে চুল পরিমাণও বঞ্চিত না । সে যদি এখনো জমি নিতে চায় জমি নিতে পারবে তাতে কোন সমস্যা নেই। আমার ভাগের জমি আমি বাটোয়ারা ছাড়া বিক্রি করে দিতে পারি এতে কোন সমস্যা নেই। চৌধুরী মো: মহেবল্লা আবুনুর বলেন,আমার মা মারা গেছে গত মাসে। এরপরে আমি সকল বোনদের ডেকে বলেছি তোমরা আসো, কে কি নিতে চাও নিতে পারো আমার কোনো আপত্তি নেই । আমরা আমাদের মুরুব্বিদের নিয়ে বসে এটা করব। আমি কারো সম্পদ মেরে খেতে চাই না সম্পদ দেয়ার ব্যাপারে আমি সব সময় রেডি। সম্পদ দেওয়ার ব্যাপারে আমার চুল পরিমাণ কোন আপত্তি নেই।