আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একজন লোক মধ্যপ্রচ্যর যে কোন দেশে যেতে বাংলাদেশের তুলনায় ৪ থেকে ৫ গুন টাকা কম লাগে।বেসরকারি এজেন্সিদের দৌরাত্ব থেকেই উদ্ভব হয়। বাংলাদেশ বিমান বন্দরে সবচেয়ে বেশী হয়রানির শিকার হয় প্রবাসীরাই, বিদেশের বিমান বন্দর গুলোর কথা নাই বললাম। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই আমাদের হয়রানি শুরু হয়। দালালদের দৌরাত্ম্য, মধ্যস্বত্বভোগীদের বাগরা দেওয়া।
সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি। বিমানের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি সহ সঠিক সময়ে বিদেশে এসে নির্ধারিত কাজ না পাওয়া। বাংলাদেশ মিশন গুলোর গাফেলতি, সীমাহীন দুর্নীতির কারনে বিদেশে এসেও হয়রানির শিকার হয়, নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হয়।
প্রবাসীদের দাবিসমূহ দেশ ও জাতির স্বার্থে পূরণ করা প্রয়োজন
০১. জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডসহ অন্যান্য ডকুমেন্টসের সংশোধনের জন্য দূতাবাসে বিশেষ সেল চালু করা।
০২. প্রবাসীদের মৃতদেহ বাংলাদেশে সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রেরণের ব্যবস্থা করা এবং প্রবাসী কল্যাণ কল্যাণ বোর্ডের পক্ষ থেকে যে অর্থ প্রদান করা হয় মৃতদেহ সরবরাহ করার জন্য সেই বিলটি পরবর্তীতে প্রদান করা হয় বিধায় এক শ্রেণীর দালাল লোকেরা দুর্নীতি করার সুযোগ পেয়ে যায়। মৃতদেহের সরবরাহের টাকা প্রদান করা হয় তা যেন আগেই প্রদান করা হয় এতে করে উপকৃত হবে মৃত্যুবরণকারীর পরিবার। কিছু কিছু দেশে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে যে চাদা করে লাশ প্রেরণ করা হয়েছে দেশে পরে সরকারের পক্ষ থেকে য়ে বিলটি দেয়া হয় তা ব্যক্তি বিশেষে এর পকেটে চলে যায়।
ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের ক্ষতিপূরণের টাকা মৃত ব্যক্তির পরিবারকে প্রদানের শর্তগুলো আরও সহজ করতে হবে যাতে পরিবারটি সহজে ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।
০৩. সকল প্রবাসীর রেমিট্যান্স প্রেরণের ওপর ভিত্তি করে প্রবাসী পেনশন স্কিম চালু করা।
০৪. প্রবাসীর স্বাস্থ্যবীমা (মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স) নিশ্চিত করে প্রবাসে এবং দেশে স্বল্প খরচে ভালোমানের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করা।
০৫. দেশে সরকারিভাবে প্রতিটি জেলায় এবং উপজেলায় প্রবাসী হাসপাতাল করার দাবি জানাচ্ছি। যেন প্রবাসী পরিবার স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারেন।
০৬. প্রবাস থেকে দেশে ফেরত কর্মীদের স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
০৭. নারী কর্মীদের বিদেশে প্রেরণের জন্য এজেন্সিগুলো নির্ধারিত বয়স ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে কিনা অভিজ্ঞ, সৎ অফিসার দিয়ে তদারকি করা, গাফিলতি থাকলে এজেন্সির বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া।
০৮. প্রবাসে অসহায় নারী শ্রমিকদের জন্য দূতাবাসের আশ্রয় কেন্দ্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে, তাদের অল্প সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা।
০৯. প্রবাসী শ্রমিকদের মরদেহ দেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে দূতাবাসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করা।
১০. প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য দূতাবাসের আইনি পরামর্শ ও সহায়তা কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি করা।
১১. পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য আগের মত কনস্যুলেট সেবা চালু করা, প্রবাসী সেবা কেন্দ্রগুলোর সেবার মান বাড়ানোর ব্যাপারে দূতাবাসের অফিসারদের দিয়ে দৈনিক মনিটরিং করা।
১২. প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ভাষা ও সংস্কৃতি শিক্ষার জন্য দূতাবাস কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি বাংলা স্কুল চালু রেখে এবং ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তার নিয়ন্ত্রণে পরিচালনা করলে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে নতুন প্রজন্ম।
১৩. বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী প্রবাসীদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করা।
১৪. এয়ারপোর্টে প্রবাসীদের সাথে যথাযথ সম্মানপূর্বক কথা বলা, প্রবাসী কল্যাণ ড্রেক্সকে শক্তিশালী করা, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তারা এয়ারপোর্টের নিয়ন্ত্রণ এবং যেখানে প্রবাসীদের সমস্যা হবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করা।
১৫. প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের মাধ্যমে বিশেষ সেল চালু করে তাদের লাগেজ গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
১৬. যেসব রেমিট্যান্স যোদ্ধা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দেশে টাকা প্রেরণ করেন তাদের দেশে অবস্থানকালে পুলিশ প্রটোকলের ব্যবস্থা করা।
১৭. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে প্রকৃত অর্থে প্রবাসীদের কল্যাণে ব্যবহার করার সুব্যবস্থা করা; যাতে করে প্রবাসী কর্মীরা সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে প্রবাসে গিয়ে জীবন-জীবিকার মান উন্নয়ন দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যারা বিদেশে ব্যবসা করতে চান তাদের যেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে সহজশর্তে ঋণ দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের কার্যক্রম কে যেন অ্যাপসের মাধ্যমে পরিচালিত করা হয় এতে করে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি কমে যাবে।
১৮. বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত প্রবাসী আসনের ব্যবস্থা করা।
১৯. প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রবাসী নীতি প্রণয়ন করা।
২০. ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে প্রবাসীদের জন্য ঢাকায় আবাসিক হোটেল চালু হতে যাচ্ছে তা যেন অ্যাপসের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হয় ।
২১. প্রবাস জীবনে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ প্রবাসীরা দেশর বিভিন্ন সেক্টরে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।
২২. প্রবাসী ব্যবসায়ীদের সুবিধার্তে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা একটি বড় বাধা তা নিরসনে আইনগত পরিবর্তন আনা।
২৩. প্রবাসী লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিকদের ডাটাবেইজের অন্তর্ভুক্ত করা।
২৪. প্রবাসে ভিনদেশী নাগরিক দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিক হামলার শিকার হলে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ করে আইনি সহায়তা প্রদান করা।
২৫. দ্বৈত নাগরিক আইন বহাল রাখা। অন্যতায় প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে বুলতে বসবে।
অবশেষে বলতে হয়, প্রবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা দাবি-দাওয়া সঠিকভাবে যদি আদায় করা হয় তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরো বৃদ্ধি পাবে এবং প্রবাসীদের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে তাদের পরিবার বাজার কাঠামোতে অর্থ বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।