চলতি বছরের শুরু থেকেই অনিয়মিত অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে তুরস্ক। সর্বশেষ আরও চারশ ১৩ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে আফগানিস্তান এবং মরক্কোতে ফেরত পাঠানো হলো। এসব অভিবাসী তুরস্কে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থান করার সময় আটক হয়েছিলেন বলে জানায় আঙ্কারা।
গত মাসে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ এদেরনে থেকে আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ৪১৩ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে বহিষ্কার বা ডিপোর্ট করা হয়েছে।
বহিষ্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত তুরস্কের সরকারি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ইউনিট সংশ্লিষ্টদের এদেরনে প্রদেশের কেন্দ্রীয় অপসারণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাদের বিশেষ ফ্লাইটে আফগানিস্তান ও মরক্কোতে ফেরত পাঠানো হয়।
চলতি বছরের শুরু থেকে এদেরনে প্রদেশের অপসারণ কেন্দ্র থেকে চার হাজারেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তুরস্কের অভিবাসন ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মতে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৯৭ হাজার ৪৪৮ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দেড়শ শতাংশ বেশি।
যুদ্ধ এবং নিপীড়ন থেকে পালিয়ে ইউরোপে নতুন জীবন শুরু করার আশায় সীমান্ত পাড়ি দিতে চাওয়া অভিবাসীরা তুরস্ককে মূল ট্রানজিট দেশ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করে আসছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তুরস্কে দুই লাখেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী ধরা পড়েছে। বিপরীতে, ২০২১ সালের পুরো বছরজুড়ে এই সংখ্যাটি ছিল এক লাখ ৬৩ হাজার।
এই বছর ধরা পড়া অনিয়মিত অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে আছে আফগান নাগরিকেরা। প্রায় ৮৭ হাজার অভিবাসী আফগানিস্তান থেকে ইরান হয়ে তুরস্কে প্রবেশ করে আটক হয়েছেন।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সিরীয় অভিবাসীরা। এই সময়ে ২৯ হাজার ৬০০ সিরীয়কে আটক করেছে তুরস্ক। এছাড়া, ১৩ হাজার অনিয়মিত অভিবাসীর গ্রেফতার নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তানের নাগরিকেরা।
এসব আনুষ্ঠানিক বহিষ্কার ছাড়াও তুরস্কে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ইরানে অভিবাসীদের জোরপূর্বক পুশব্যাক করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি বহু বাংলাদেশি অভিবাসীরা ইনফোমাইগ্রেন্টসকে অভিযোগ করেছেন, তাদের ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে তুরস্কের বাহিনী ইরান সীমান্তে মাফিয়াদের হাতে পুশব্যাক করেছে।
এ ব্যাপারে তুরস্কের আশ্রয় ও অভিবাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইনফোমাইগ্রেন্টসের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।