বাংলাদেশের মানুষদের ক্রিকেটপ্রেমের গল্পটা জানা হয়ে গেছে সাত সমুদ্র তের নদীর এপারের দেশের মানুষেরও। না জেনে উপায় আছে? হোবার্টের পর সিডনিতে বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে রীতিমতো জনস্রোত ছিল। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড যেন হয়ে উঠেছিল এক টুকরো বাংলাদেশ। দেশের বাইরে যেখানে খেলতে নেমেছেন দর্শকদের ভালবাসা অন্য অনেক দেশের থেকে একটু বেশিই পেয়েছেন সাকিব আল হাসানরা। তার ব্যাতিক্রম হয়নি ব্রিসবেনেও।
রোববার গ্যাবা স্টেডিয়ামে খেলা শুরুর আগেই শুরু হয়ে যায় লাল-সবুজের মিছিল। প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমর্থন জানাতে ছুটে আসেন কুইন্সল্যান্ডের ওলুংগাব্বার এই মাঠে। স্টেডিয়ামে ঢোকার আগে ছবি তুলেছেন। গলা ছেড়ে চিৎকার করে স্লোগান তুলেছেন। সবারই একটা চাওয়া দল ভাল খেলুক!
অনেককেই দেখা গেছে সপরিবারে এসেছেন খেলা দেখতে। এমনকি পরিবারের ছোট্ট যে সদস্য হাঁটতে শেখেনি তাকেও সঙ্গে করে এসেছেন মাঠে। সবারই গায়ে প্রিয় দলের জার্সি। আর হাতে লাল-সবুজ পতাকা।
বাংলাদেশের খেলা দেখতে আসা তরুণ রুবেল বলছিলেন, ‘আমি সাকিবদের খেলা দেখতে সিডনি থেকে ড্রাইভ করে এসেছি। ম্যাচ দেখে আবার ফিরে যাবো। একটা জয় নিয়ে ফিরতে চাই। আশা করি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কিছু একটা হবেই।’
আরেক তরুণী অবশ্য জয় পরাজয় নিয়ে এতোটা ভাবছেন না। তিনি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে এসেছেন মাঠে। আর হাতে নিয়েছেন টাইগারদের সঙ্গে যায় এমন একটা প্ল্যাকার্ড, ‘হারলেও বাংলাদেশ, জিতলেও বাংলাদেশ।’ সঙ্গে গলায় স্লোগান, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ!’
রঙিন পরচুলা মাথায় দিয়ে মাঠে এসেছে আরেক দর্শক। গায়ে বাংলাদেশ লেখা লাল-সবুজে রঙের জার্সি। তারও প্রত্যাশা জয় পরাজয় যাই হোক, বাংলাদেশ চেষ্টা করুক। আর প্রতিপক্ষ যখন জিম্বাবুয়ে তখন জয়টাও উঁকি দিচ্ছিল তার কথায়।
উচ্ছ্বাস ছিল কিছু জিম্বাবুইয়ান সমর্থকদেরও। তারাও এসেছেন তাদের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে। আগের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর পর দেশটির সমর্থকরা হাওয়ায় উড়ছেন। একজন তো বলেই বসলেন এই ম্যাচে নিশ্চিত করেই জিতবে জিম্বাবুয়ে। আর ম্যাচসেরা হবেন সিকান্দার রাজা।
কিন্তু তার সেই কথাটা আড়ালে পড়ে যায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের স্লোগানে। যেখানেই সাকিবরা যাচ্ছেন এমনই প্রাণ খোলা অর্ভথ্যনা মিলছে। দেশের বাইরে সাকিব-তাসকিনদের একটু খানি সাফল্যই তাদের এনে দেয় রাজ্যের সুখ। কিন্তু সেই সুখ যে খুবই ক্ষণস্থায়ী!