কমিউনিটি সেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ফ্রি ম্যান অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর জেনারেল অ্যাকাউন্টেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান।
১৮ অক্টোবর দুপুরে সিটি অব লন্ডন গিলডহলের লর্ড চেম্বারলিন চেম্বারে অ্যাকাউন্টেন্সি, ব্যবসা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও কমিউনিটি সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এ সময় চেম্বার অব কমার্সের নেতা, সাংবাদিকসহ কমিটির বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
‘ফ্রি ম্যান অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা নেওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাকাউন্টেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে এই প্রেস্টিজিয়াস সম্মাননা নিয়েছি। এটি আমার কমিউনিটি জন্য উৎসর্গ করলাম। এই সম্মাননা কমিউনিটির জন্য বেশি কাজ করতে আমাকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করবে।’
অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের (বিবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সাঈদুর রহমান রেনু, সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগির বখত ফারুক, বশির আহমদ, ফাইন্যান্স ডিরেক্টর আতাউর রহমান কুটি, বিবিসিসিআই লন্ডন রিজিয়নের প্রেসিডেন্ট মনির আহমদ, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি ও সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির হেড টিচার আশিদ আলী, সাবেক কাউন্সিলার ওয়াইসুল ইসলাম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মুহি মিকদাদ, জিয়াউর রহমান, আলাউদ্দিন, সাংবাদিক জাকির হোসেন কয়েছ, চ্যানেল এসের প্রধান ক্যামেরাপার্সন রেজাউল করিম মৃধা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, অ্যাকাউন্টেন্ট আবুল হায়াত নুরুজ্জামান ১৯৮১ সালের ১০ ডিসেম্বর সিলেটে সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের দিঘিরপার রাজারগাঁও গ্রামে জন্ম নেন। তার বাবা মরহুম মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম মতি বাংলাদেশ বনবিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন। মা নুরুন্নাহার একজন গৃহিণী। ২১ বছর বয়সে তিনি লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে ব্রিটেনে আসেন এবং গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের ওপর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ২০১০ সালে পূর্ব লন্ডনের ভ্যালেন্স রোডে নিজস্ব অ্যাকাউন্টটিং প্রতিষ্ঠান তাজ অ্যাকাউন্টেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করলেও বর্তমানে এটি একটি বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কাস্টমার সার্ভিস এবং নিজের দক্ষতার কারণে একাধিক অ্যাওয়ার্ড লাভ করে তাজ অ্যাকাউন্টেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসার পাশাপাশি কমিউনিটির বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডেও সহযোগিতা করে আসছে।
আবুল হায়াত নুরুজ্জামান ২০১৭ সালে ‘এএটি লাইসেন্স মেম্বার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তিনি ২০১৯ সালে দ্য লন্ডন এশিয়ান বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস কর্তৃক বেস্ট স্মল বিজনেস অব দ্যা ইয়ার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। অ্যাকাউন্টিং টেকনিশিয়ান ম্যাগাজিন জুলাই-আগস্ট ২০১৭ সংখ্যা তাকে নিয়ে বিশেষ কভার স্টোরি প্রকাশ করে।
নুরুজ্জামান তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে স্পেশাল স্পিকার হিসেবে বিভিন্ন ইভেন্টে নিয়মিত অংশ নেন। তিনি বিবিসিসিআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল নির্বাচিত হওয়ার আগে লন্ডন রিজিওয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১২৩৭ সাল থেকে ‘ফ্রি ম্যান অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ (ফ্রিম্যানশিপ) সম্মাননা চালু রয়েছে। স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিরা এ সম্মাননা পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে অনারারি ‘ফ্রিম্যান অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা লাভ করেছেন সব নামি-দামি ব্যক্তিরা। এদের মধ্যে অন্যতম, ডিউক অব ক্যামব্রিজ, প্রিন্স জর্জ ১৮৫৭ সালে এ সম্মাননা লাভ করেন।
এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা, ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, বেনজামিন ডিস্রাইলি ও মার্গারেট থ্যাচার, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্সেস ডায়ানা, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর হেলমট কোহলসহ অনেকে সম্মাননা পেয়েছেন।