পদত্যাগ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে তিনি দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় মসনদ ছাড়তে বাধ্য হলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের ইতিহাসে ব্রিটেনের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড করলেন।
কে হবেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী?
ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে এখন নানা জল্পনা চলছে।
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হবার সময় যারা তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন- তার মধ্যে অন্তত দু’জন ঋষি সুনাক এবং পেনি মরড্যান্টের নাম শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসের নামও শোনা যাচ্ছে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও প্রতিযোগিতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
ঋষি সুনাকের সম্ভাবনা কতটুকু?
যখন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের একাংশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তখন থেকেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভেসে উঠছে ঋষি সুনাকের নাম। বস্তুত, ঋষি সুনাক তার সমর্থকদের জানিয়েও দিয়েছেন, প্রস্তাব এলে প্রধানমন্ত্রী হতে ইচ্ছুক তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচনের লড়াইয়ের সময় সুনাক বলেছিলেন, “কর কাটছাঁটের যে কথা লিস ট্রাস বলছেন, তা বাস্তবায়িত হলে সুদের হার দ্রুত বাড়বে এবং বন্ধকি সুদেও তার প্রভাব পড়বে।”
তারপরও লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এবং ক্ষমতায় আসার ৩৭ দিনের মাথায় অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকে বরখাস্ত করে পূর্বঘোষিত সংক্ষিপ্ত বাজেটের একাংশ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। ঋষি সুনাকের পথে হেঁটে করপোরেট করের হার ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ফের ২৫ শতাংশও করেছেন। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি লিজ ট্রাসের। বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাদের ক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
অন্যদিকে, ঋষি সুনাক যা বলেছিলেন, তা-ই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে ব্রিটেনের রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।
একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান এমপি মিলিয়ে সম্প্রতি ১৫-২০ জন নৈশভোজের আযোজন করা হয়। কখন এবং কীভাবে লিজ ট্রাসকে সরিয়ে সুনাক এবং পেনি মর্ডান্টের জুটিকে মন্ত্রিসভার দুই শীর্ষ পদে বসানো যায়, ওই নৈশভোজে তারই পরিকল্পনা হয়। এখন তাকে নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে, বিরোধীরা নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবি তুলছেন। কনজারভেটিভদের এই ছন্নছাড়া অবস্থার সুযোগ নিয়ে লেবার পার্টি পরের ভোটে ক্ষমতা দখল করতে পারে বলেই অনেকের মত। সেক্ষেত্রে হাতে গোনা কয়েক দিন প্রধানমন্ত্রী থেকে সুনাকের আদৌ কোনও লাভ হবে কি না, সেটাও বড় প্রশ্ন।