জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ানো হয়েছে বাস ভাড়া। বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করেই বাড়তি ভাড়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় বাসের চালক-সুপারভাইজারেরা সেই সিদ্ধান্ত মানছেন না। তারা ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন। এ নিয়ে প্রতিদিনই বাসের স্টাফদের সঙ্গে যাত্রীদের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। কোথাও হাতাহাতিও হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে মাঠে নামছেন পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা। ১১টি দল রাজধানীতে এই নৈরাজ্য দেখতে মাঠে থাকবে, প্রয়োজনে বাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ডয়চে ভেলেকে এমনটাই জানালেন ঢাকা পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, অভিযোগ আমরাও পাচ্ছি। এখন ব্যবস্থা নেব।
সংবাদমাধ্যমে বাস ভাড়া নিয়ে যা আসছে তা কি সত্যি? নাকি সংবাদপত্রগুলো বাড়িয়ে লিখছে? সেটা দেখতে রোববার বাসে চড়েছিলেন আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, মিরপুরের পল্লবী থেকে বনানীর সৈনিক ক্লাব পর্যন্ত আমি বাসে চড়েছি। বাসটির নাম সম্ভবত মক্কা পরিবহন। আগে এই পথটুকুতে ২০ টাকা ভাড়া নেওয়া হতো। এদিন বাসের স্টাফ আমার কাছে ৩০ টাকা ভাড়া চাইলেন। আমি তাকে বললাম, সরকার যে ২২ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করেছে তাতে তো ভাড়া হওয়ার কথা ২৪ টাকা। তুমি এক টাকা বেশি নিতে পার। অর্থাৎ ২৫ টাকা। কেন ৩০ টাকা চাচ্ছো। জবাবে সে আমাকে বলল, মালিকেরা ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, এই টাকাই দিতে হবে। না দিলে আপনি নেমে যেতে পারেন। বিষয়টি আমি দলীয় ফোরামে বলেছি। সেখানে আমাদের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ছিলেন। আমি মনে করি, জনগণের কাছ থেকে বাসের স্টাফরা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
এই চিত্র শুধু কাজী জাফরউল্লাহর ক্ষেত্রে নয়, অন্য যাত্রীদের কাছ থেকেও একইভাবে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। রইসুল ইসলাম নামে একজন বাসযাত্রী বললেন, মোহাম্মদপুর থেকে মালিবাগ রেল গেট পর্যন্ত আগে ভাড়া নিত ২০ টাকা। এখন নিচ্ছে ৩০ টাকা। এরা ভাড়ার কোনো সামঞ্জস্য রাখছে না। যা খুশি নিচ্ছে। এই পথের দূরত্ব ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার। আগের হারে ভাড়া হয় ১৪ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমান হারে তা আসে ১৬ টাকা ৭৫ পয়সা। অর্থাৎ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে ১৩ টাকা ২৫ পয়সা। আড়াই টাকা কিলোমিটারের বদলে আদায় করা হচ্ছে ৪ টাকা ৪৭ পয়সা হারে।