যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা শোনা যায় অহরহ। কিন্তু যৌতুকের দাবিতে খোদ শ্বশুরের হাতে জামাইকে মার খাওয়ার ঘটনা শুনলে অবাক হওয়ারই কথা। এমনটাই ঘটেছে পঞ্চগড়ের জগদল এলাকায়। মেয়ের নামে বাড়ি লিখে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর তবিবর রহমান এবং শ্যালক তরিকুল ইসলাম তারেক ও পারভেজ এর সহযোগিরা চেয়ারের সাথে বেঁধে ঘরের দরোজা বন্ধ করে অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেছেন পঞ্চগড়ের সাঈদ হোসেন দিদার।
ঘটনাটি ঘটেছে ২১ জুলাই বৃহষ্পতিবার বিকেলে। মেয়ে জামাইয়ের বাসায় বেড়ানোর নাম করে আসেন শ্বশুর তবিবর এবং শ্যালক তারেক ও পারভেজ। নিমন্ত্রণ খেতে বসে নানা কথার ফাঁকে তারা দিদারকে তার পৈত্রিক বাড়িটি কন্যার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু দিদার রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর চালায়। এক পর্যায়ে শ্যালক তারেক বাইরে অপেক্ষমান তার বন্ধুদের ডেকে এনে রুমের দরোজা বন্ধ করে চেয়ারের সাথে বেঁধে তাকে মারধর করে বরে অভিযোগ। এ সময় বাড়িওয়ালীকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় হামলাকারীরা।
পঞ্চগড়ের জগদল এলাকায় ভাড়া থাকে দিদার। কিন্তু তার পৈত্রিক বাড়ি জেলা শহরের পুরাতন গরুহাটির রাজনগর এলাকায়। এতোদিন দিদার স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে এই বাড়িটিতেই ছিলো। এক পর্যায়ে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে বনিবনা না হওয়ায় দিদারের স্ত্রী তামান্না স্বামীকে অন্যত্র বাসা নিতে বাধ্য করে।
দিদারের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন পুত্রবধুকে তারা নিজ কন্যার মতোই আদর স্নেহ করতেন। কিন্তু মেয়েটা তার বাবা-মার লোভের কারণে স্বামীকে মার খাওয়ালো, এটা তিনি কোনো মতেই মেনে নিতে পারছেননা। দিদারের মা বলেন ‘আমরাতো সারাজীবন বেঁচে থাকবোনা। বাড়িটাতো ছেলেই পাবে। ছেলে পাওয়া মানে স্ত্রী পুত্র মিলেইতো ভোগ করবে। এখনি বাড়িটা পুত্রবধুর নামে লিখে দিতে হবে কেন? ‘
শ্বশুর- শ্যালক বাইরের লোকজন ডেকে এনে নিজ জামাইয়ের বাসায় এভাবে জামাইকে মারধরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। দিদারের দাবি তার শ্যালক তরিকুল ইসলাম তারেক জামাত শিবিরের ক্যাডার। তার নামে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় মামলা রয়েছে।
যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর এবং শ্যালকের হাতে জামাইয়ের মার খাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে পুরো এলাকায়। এ বিষয়ে স্থানীয় সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী। দিদারকে মারধর করে করে চলে যাওয়ার সময় আক্রমণকারীরা দিদারের কাছে রক্ষিত ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে অভিযোগ দিদারের।
বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।