সাকিব আল হাসান বলছেন, ব্যর্থতার ভয় থেকেই এমন বিপর্যয়। ভুল করলে ফলটা খারাপ হবে, আর এই ভাবনা থেকেই চাপে পড়েন ব্যাটসম্যানরা। সতীর্থদের উলটো চিন্তা করতেও পরামর্শ দিলেন তিনি।
টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার দৃশ্যটা নতুন নয়। মিরপুর স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটার ত্রাতা হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম-লিটন দাস। গতকাল চতুর্থ দিনের বিকালেও তাসের ঘর বাংলাদেশের ব্যাটিং। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে ২৩ রানেই চার ব্যাটসম্যান সাজঘরে।
যার প্রভাবে দ্বিতীয় টেস্টে ঘোর বিপদে বাংলাদেশ দল। আজ পঞ্চম দিনে ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জের মুখে টাইগাররা। এজন্য আজ অন্তত আড়াই সেশন ব্যাট করতে হবে। আর সেটি করতে গেলে দিনের প্রথম সেশনে ১ উইকেটের বেশি হারানো যাবে না।
সাকিব এমনটাই মনে করেন। ম্যাচ বাঁচানোর ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে এই অলরাউন্ডারের মনে। তবে সেখানেও জুড়ে দিয়েছেন অনেক যদি-কিন্তু।
গতকাল দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচ বাঁচানোর আশা জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘মুশফিক ভাই ও লিটনের মতো যদি কেউ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে পারে দুই জন, তাহলে ম্যাচ বাঁচানোর আশা আছে।’
তবে পরিস্হিতি বেশ কঠিন। এখনো ১০৭ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হারের চোখ রাঙানিও রয়েছে। হার এড়াতে করণীয় জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘দলকে বাঁচাতে হলে আমরা যারা আছি, এখনো ছয়টা উইকেট আছে। সবাইকে অবদান রাখতে হবে। প্রথম ঘণ্টায় যদি উইকেট না হারাই। লাঞ্চ পর্যন্ত না হারাই তাহলে একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করব।’
শুধু মুশফিক-লিটন নয়, সাকিব নিজেও অন্তত ৩ ঘণ্টা ব্যাটিং করতে চান। দলের প্রয়োজনে লড়তে প্রস্ত্তত এ বাঁহাতি অলরাউন্ডার, ‘এখন দলের যা পরিস্হিতি, আমি যদি তিন ঘণ্টা ব্যাট করি, আশা করি যে দুজন আছে ওরা যদি লাঞ্চ পর্যন্ত খেলতে পারে। আমি তারপরে তিন ঘণ্টা ব্যাট করতে পারি দলের জন্য ওটা বেশি গুরুরত্বপূর্ণ আসলে। লাঞ্চের আগে একটার বেশি উইকেট পড়লে আমরা খুব বাজে অবস্হায় থাকব।’
আজ মূলত লঙ্কান দুই পেসারের বোলিংয়ের সময়টা সতর্কভাবে কাটিয়ে দিতে বলেছেন সাকিব। রাজিথা-আসিথাকেই বড় হুমকি মানছেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের এ বিষয়টা বারবারই হচ্ছে, লক্ষ্য করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘শেষ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ দলে এই সমস্যাটা হচ্ছে। আমি যখন টিমে ছিলাম না তখনো এটা হয়েছে। আবার আমি আছি এখনো হচ্ছে। সেকেন্ড ইনিংসে আমরা অনেকবারই ব্যর্থ হয়েছি নিকট অতীতে। ঐ জায়গাতে উন্নতির সুযোগ ছিল। আজকেও (গতকাল) আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
লাঞ্চের পর ম্যাথুস-চান্দিমালের জুটি না ভাঙায় ম্যাচটা বাংলাদেশের হাত থেকে ফসকে গেছে। তাদের জুটি যত দীর্ঘ হয়েছে ততই চাপ বেড়েছে স্বাগতিকদের ওপর। সাকিব গতকাল বলেন, ‘যখন লাঞ্চে উইকেট পড়েনি তখনই বোঝা যাচ্ছিল আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের রানটা টপকে যাবে। দেড় শ-দুই শ রানের একটা লিড নেওয়ার অবস্হায় তারা ছিল। লাঞ্চ পর্যন্ত উইকেট না পড়ায় আমাদের জন্য পরিস্হিতি কঠিন হয়ে গেছে।’
ব্যাটিংয়ে বড় স্তম্ভ তিনি। কিন্তু শেষ কিছু ইনিংসে মুমিনুলের ব্যাট একদমই হাসছে না। গতকাল চাপের মুহূর্তে উইকেট বিলিয়ে এসে হতাশায় সাজঘরে ফিরছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ছবি: বিসিবি