আমার মনে হয় সকল কৃষিবিদদের একসাথে কথা বলার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রগুলোকে জানাতে হবে নিজ দেশে কৃষিপণ্য উৎপাদনের গুরুত্ব। এবার করোনা মহামারি ও যুদ্ধের কারণে কিছুটা হলেও সারা পৃথিবীতে ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সবাই টের পাচ্ছে। সবাই দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। অথচ কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে আমরা নিজেরাই সকল কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে পারি। আমাদের মাটিও উর্বর, কৃষকও পরিশ্রমী।
যে দেশে আরবের খেজুর, ত্বীন, যয়তুন, ভীন দেশি টিউলিপ, আপেল, মাল্টা, স্ট্রবেরি, ড্রাগন, ভিয়েতনামি নারিকেল থেকে শুরু করে সকল বিদেশী কৃষিপণ্য উৎপাদন করা যাচ্ছে। সে দেশ কেন রিজার্ভের ডলার বিক্রি করে ভোগ্য কৃষিপণ্য আমদানি করবে? তাও বছরের পর বছর ধরে। বেশি খরচ হয় সেই কৃষিপণ্যে, যেগুলো আগে এখানেই উৎপাদিত হতো বা উৎপাদন করা সম্ভব।
কষ্ট করে বিদেশে শ্রম দিয়ে প্রবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়েছে। তারাতো সম্মান পায় না। তাদের শ্রমের রিজার্ভ আমদানির নামে একদল পাচার করছে। এছাড়া সামনের পৃথিবীতে আরও বড় বড় দূর্যোগ আসবে, তখনো আমদানি খরচ বাড়বে।
তাই এসব দায় দায়িত্ব সকল নাগরিকের। কিন্তু মাথামোটা জাতির সকলে বুঝবেনা। কৃষকের নামে সংগঠন খুলে কৃষকের কাছে না যাওয়া জাতি আমরা। কৃষকের ধান কেটে ভাইরাল হওয়া জাতি আমরা।
কিন্তু কৃষক কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এবারেও কৃষক ধানের দাম পাচ্ছে না। পেঁয়াজের দামও পায়নি, অথচ অক্টোবরেই পেঁয়াজ ২০০৳ ছাড়াবে। কেননা প্রতিবছর ভারত এসময় রপ্তানি বন্ধ করবে।
তাই ৭১ এর পর কৃষিবিদরা যে ভূমিকা রেখে এদেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ভূমিকা রেখেছে। এখনো সময় হয়েছে আবার ভূমিকা রাখার। ডলারের রিজার্ভ রক্ষার।
এখনকার কৃষিমন্ত্রী একজন কৃষিবিদ। তাই সকলের একসাথে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সকল সিণ্ডিকেট ভেঙে, কৃষকের কৃষি ফিরিয়ে দিয়ে, সকল কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার।
টিকটক, কাঁচা বাদাম, হিরো আলম, আর পরিমণির পেট ভাইরাল করার চেয়ে বেশি জরুরী কৃষকের নায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে কথা বলার। অনুরোধ করছি সকলকে। তরুণ থেকে বয়োঃবৃদ্ধ সকল কৃষিবিদকে। একসাথে সকলে কথা দিলে রাষ্ট্র অবশ্যই একটি সুষম কৃষি উৎপাদনের দিকে যাবে। নয়তো বড় কৃষকরা কিভাবে কৃষি জমিকে মাছ চাষ, বাগানে রুপান্তর করছে। নিজ নিজ এলাকায় দেখলেই বুঝতে পারবেন।
কৃষিবিদ কারিমুল আলম