সাবমারসিবাল পাম্প দিয়ে কেবল পানি তোলাই হচ্ছে না। মাদক পরিবহণের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রথমবারের মতো হালকা যন্ত্রটির মধ্যে ঢুকিয়ে পরিবহণের সময় ইয়াবার চোরাচালান জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এছাড়া কমলালেবুর মধ্যে ইয়াবা ভরে চলছে চোরাচালান। একেকটির মধ্যে ঢোকানো হচ্ছে পাঁচশো বড়ি।
দু’টি আলাদা অভিযানে পনেরো হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছে সাত কারবারি।
কক্সবাজার থেকে ঢাকার ঠিকানায় কুরিয়ারে পাঠানো হয়েছে পানি উত্তোলনের সাবিমারসিবল পাম্প। এস এ পরিবহণের যাত্রাবাড়ি শাখা থেকে যন্ত্রটি সংগ্রহ করেন চার যুবক।
আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল গোয়েন্দাদের একটি দল। চারজনকে ধরার পর সাবমারসিবল পাম্পের বিভিন্ন অংশ আলাদা করে তল্লাশিতে মেলে এগারো হাজার ইয়াবা বড়ি। চালানটি তিন ভাগ হয়ে পাবনা, মুন্সিগঞ্জ ও বাগেরহাট পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।
এই প্রথম সাবমারসিবলের মধ্য দিয়ে ইয়াবার চোরাচালান জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এখন হালকা যন্ত্রটির মধ্যে ইয়াবা ঢুকিয়ে পরিবহণের প্রবণতা বেড়েছে। স্ক্যানের ব্যবস্থা না থাকায় চোরাচালানের জন্য কুরিয়ার সার্ভিসকে বেছে নিচ্ছে কারবারিরা।
ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগ (গুলশান) উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে যতগুলো কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি আছে এরা ইন্টারনাল কোনো স্ক্যানার ব্যবহার কর নেয়। সেই সুযোগটা নিয়েই কিছু লোভী লোকেরা কখনো এই সাবমারসিবল পাইপ, কখনো বইপুস্তকের মধ্যে এই কাজগুলো করে থাকছে।’
শুধু সাবমারসিবলেই নয়, কমলালেবুর মধ্যে ইয়াবা ঢুকিয়ে চোরাচালন করছে আরেকটি চক্রটি। লেবুর খোসা বিশেষভাবে কেটে তৈরি করা হয় ফাঁকা জায়গা। তারপর একেকটি কমলার মধ্যে ঢোকানো হয় পাঁচশো করে বড়ি। তারপর ফল ব্যবসায়ী সেজে ইয়াবা পরিবহণ করে কারবারিরা।
এই চক্রের তিনজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চার হাজার নেশাজাতীয় বড়ি। কর্মকর্তারা বলছেন, চোরাচালানের কৌশলে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আনছে মাদক কারবারিরা।
মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীন মাদক সম্পর্কে একটা ডিমার্ক থাকার কারণে নানা কৌশলে উত্তাল সমুদ্র অথবা বান্দরবানের জঙ্গল পথে এই মাদক দ্রব্য আসতেই থাকবে।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কড়া নজরদারি ছাড়া ইয়াবার ব্যবসায় লাগাম টানা সম্ভব নয় বলে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে পুলিশ।