১৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে মাহফুজের সম্বল এখন এক টুকরো সাবান, ছেঁড়া একটি ব্যাগ আর কিছু চিঠি। স্ত্রীর একাউন্টে পাঠানো কোটি টাকা আর স্ত্রীকে হারিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সদ্য মালয়েশিয়া ফেরত এই তরুণ। আর তার স্ত্রী রয়েছেন তারই টাকায় তৈরি ঘরে নতুন স্বামীকে নিয়ে।
স্কুল জীবন থেকে রজনী খাতুন এর সাথে গভীর প্রেম ছিলো, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের শৈলধুকড়ী গ্রামের মাহফুজার রহমান এর। বিয়েও করেছিলেন বাড়ি থেকে পালিয়ে। বিয়ের কিছু দিন পর ভাগ্য ফেরাতে মাহফুজার পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। । ১৪ বছর প্রবাস জীবনে ৫ মাস জেলও খেটেছেন তিনি। এরপর দেশে ফিরে উঠতে পারলেন না নিজের বাড়িতেই। কারণ তার পাঠানো টাকায় গড়ে তোলা বাড়িতে উঠতে দিচ্ছেনা তারই সাবেক স্ত্রী। সাবেক শব্দটা এই জন্যই যে, মাহফুজার রহমানকে তালাক দিয়ে মামাতো ভাইকে বিয়ে করেছেন রজনী খাতুন। নতুন বাড়িতে সুখের সংসার পেতেছেন নতুন স্বামী নিয়ে।
স্বজনরা জানান, গেলো কয়েক বছর ধরেই পরিবারের কারো সাথে মাহফুজারকে যোগাযোগ করতে দিতেন না রজনী, এমনকি মাহফুজারের পরিবারের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখেননি নিজেও । স্বামীর সাথে একমাত্র তারই হতো কথা, টাকাও আসতো রজনীর একাউন্টে ।
যদিও মাহফুজের অভিযোগ তার পাঠানো কোটি টাকার বাড়িটি নতুন স্বামী ও তার গংদের নিয়ে দখল করে আছেন রজনী। তবে রজনী খাতুন বলছেন, বিগত দিনে একটি টাকাও পাঠায়নি মাহফুজ। উপরন্তু পরের বাড়িতে কাজ করে খেতে হয়েছে তাকে।
স্ত্রীসহ আট জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও দেড়কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে গেলো ৫ এপ্রিল বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মাহফুজার রহমান । মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দিয়ে আগামী ১৮ মে’র মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
ভাগ্য ফেরাতে গিয়েছিলেন প্রবাসে অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাসে হারিয়েছেন স্ত্রীকে, হারিয়েছেন অর্থ-কড়ি সবই। আছে শুধু বাড়িটা, সেটাও এখন চলে গেছে দুর্বৃত্তদের দখলে। সহায় সম্বল হারিয়ে আর কতদিন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে এই প্রবাসীকে। সবার দৃষ্টি এখন আদালতের দিকে।