ফ্রান্সের অভ্যন্তরে স্বল্প দূরত্বের যেসব স্থানে ট্রেন সার্ভিস রয়েছে সেখানে বিমান চলাচল বন্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন দেশটির আইন প্রণেতারা। মূলত কার্বন নিঃসরণ কমাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
ইউরোপের এয়ার বাস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়েছে ২০৩৫ সালের মধ্যে তারা ‘হাইড্রোজেন’ ফুয়েলে উড়োযান চালাবে। যদি হাইড্রোজেন ফুয়েল ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদন করা সম্ভব হয়, তবে ফ্রান্স এর সুবিধা নিতে পারে বলে জানানো হয়। তবে এর জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তি কিংবা তুলনামূলকভাবে খরচ কম কিনা এ ব্যাপারে পরিষ্কার করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৮ সালে সুইডেনে ফ্লাইট শেমিং আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সুইডেনও ২০৩০ সালের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ও ২০৪৫ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো পরিবেশবান্ধব করার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে দেশটিতে অধিক মাত্রায় পরিবেশ দূষণকারী উড়োযানগুলোকে উচ্চহারে বিমানবন্দর ফি প্রদানের নিয়ম করেছিল দেশটি।
এই সময়ে ফ্রান্স অভ্যন্তরীণ রুটে স্বল্প দূরত্বের উড়োযান ফ্লাইট বন্ধ করে বিকল্প যান ট্রেন ও বাস ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে।
সপ্তাহ শেষে যেসব রুটে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ট্রেনে যাওয়া সম্ভব সেসব রুটে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আইন প্রণেতারা ভোট দিয়েছেন। তবে তাদের দূরপাল্লার সব ফ্লাইট চলবে। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে।
তবে কানেক্টিং ফ্লাইটগুলোর ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কোনো প্রভাব ফেলবে না। এখন এই সিদ্ধান্ত আইনে পরিণত হওয়ার আগে সিনেটে ভোটে জন্য তোলা হবে। আর সিনেটে পাস হলে তা আইনে পরিণত হবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকো ২০১৯ সালে ফ্রান্স সিটিজেনস কনভেনশন অব ক্লাইমেট নামক একটি কমিটি গঠন করে। সেখানে দেশটির ১৫০ জন নাগরিককে সদস্য করা হয়। দেশের অভ্যন্তরে যেসব স্থানে চার ঘণ্টায় পৌঁছান যায়, সেখান বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করে সেই কমিটি।
এর আগে, আফ্রিকায় প্রথম পরিবেশবান্ধব ফ্লাইট চালু করল মিসরভিত্তিক উড়োজাহাজ সংস্থা ইজিপ্টএয়ার। কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্যারিস পর্যন্ত ফ্লাইটটিতে যাত্রীদের জন্য পরিবেশবান্ধব পরিষেবা সরবরাহ করা হয়েছে।
মিসরের বেসামরিক উড়োজাহাজ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চালু করা ফ্লাইটটিতে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হয়। ফ্লাইটটিতে যাত্রী সংখ্যা ছিল ২১৯। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি ইজিপশিয়ান সিভিল এভিয়েশনের জাতীয় দিবস পালন করা হয়। ২৬ জানুয়ারিতে ৯২তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে পরিবেশবান্ধব ফ্লাইটটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় ফ্লাইটে একক ব্যবহার্য প্লাস্টিকজাত উপাদান ৯০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য ইজিপ্ট এয়ারের। এদিকে উড়োজাহাজ সংস্থাটি ২৭টি একক ব্যবহার্য প্লাস্টিকজাত পণ্য শনাক্ত করেছিল। এর পরই পরিবেশবান্ধব পণ্য দিয়ে সেগুলো পরিবর্তন করা হয়।