আফগানিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের কমান্ডার আনাস হাক্কানি এবং সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের শান্তি দূতও এ সময় উপস্থিত ছিলেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওই বৈঠকের ছবি এরইমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে তবে তারা কী বিষয়ে বৈঠক করেছেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। এর আগে হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই সংগঠরটি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তালেবানকে আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ভয়ানক জঙ্গি সংগঠন হচ্ছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক। গত কয়েক বছরে আফগান সেনাবাহিনী এবং তাদের পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর ওপর বেশ কয়েকবার ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে বলেও এই সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন হামিদ কারজাই। তিনি এখনও আফগানিস্তানেই অবস্থান করছেন। তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় হামিদ কারজাই বলেন, আমার মেয়েদের নিয়ে আমি কাবুলেই আছি। আমি সরকারি বাহিনী ও আফগান জনগণের সুরক্ষা প্রদানের আহ্বান জানাই।
তবে হামিদ কারজাই দেশে থাকলেও সম্প্রতি আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি চারটি গাড়ি ও একটি হেলিকপ্টারভর্তি নগদ অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তার কাছে আরও বিপুল অর্থ ছিল, কিন্তু সেগুলো গাড়ি ও হেলিকপ্টারে না ধরায় ফেলে যেতে হয়েছে। কাবুলের রুশ দূতাবাসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা আরআইএকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার (১৫ আগস্ট) তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে যান পশ্চিমা সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট। অবশ্য কিছু গণমাধ্যমের দাবি, তাজিকিস্তান অনুমতি না দেওয়ায় ওমানে গেছেন আশরাফ গানি। তার সঙ্গে স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও আফগানিস্তান ছেড়েছেন বলে জানা যায়।
এদিকে হামিদ কারজাইয়ের হাক্কানি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছে না আফগানরা। সামাজিক মাধ্যমে অনেক আফগান নাগরিক হতাশা প্রকাশ করেছেন।
গত রোববার তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর মূলত পুরো আফগানিস্তানের দখল তাদের হাতে চলে যায়। এখন শুধু তালেবানের সরকার গঠনের অপেক্ষা। এর মধ্যেই হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে হাক্কানি সংগঠনের নেতারা কেন বৈঠক করলেন তাও পরিষ্কার নয়। তারাও কি নতুন সরকারে অংশ নিতে চাচ্ছেন কীনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না কারণ দু’পক্ষের কেউই এ বিষয়ে এখনও কোনো বক্তব্য প্রকাশ করেনি।