ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভে নেমেছেন দেশটিতে আশ্রয় নেয়া আফগান শরণার্থীরা। শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজের সুযোগ দেয়ার দাবিতে সোমবার (২৩ আগস্ট) দিল্লির জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
আগামী ১০ দিন তাদের এই আন্দোলন-বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে। আফগানিস্তানে সংকটজনক পরিস্থিতির কারণে গত কয়েকদিনে কাবুল থেকে ভারতে গিয়েছেন অনেক আফগান নাগরিক। অনেকে আবার বেশ আগে থেকেই দেশটিতে রয়েছেন।
কিন্তু কয়েক বছর পার হলেও শরণার্থী হিসেবে ভারতে কোনো সুযোগ-সুবিধাই পাচ্ছেন না তারা। আর এমন অভিযোগেই সোমবার দিল্লিতে ইউএনএইচসিআর-এর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আফগান শরণার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, আফগান শরণার্থীদের অনেকে ৫ বছর ধরে, এমনকি অনেকে ১৫ বছর ধরে ভারতে রয়েছেন। অথচ দেশটিতে শিক্ষা, কাজের সুযোগ এবং চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্যের কোনো সুবিধাই তারা পান না। এমনকি অনেকের শরণার্থী কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেটা নবায়ন করা হয় না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আফগান শরণার্থীদের দাবি, দিল্লিতে তারা শরণার্থী হিসেবে থাকতে পারেন, কিন্তু কাজ করতে পারেন না। ফলে জীবনধারণ করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবিলম্বে তাদের কাজের অধিকার দিতে হবে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, দিল্লিতে প্রায় ২২ হাজার আফগান শরণার্থী বসবাস করেন। বহু বছর ধরে তারা দিল্লির বাসিন্দা। তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে আরও শরণার্থী ভারতে গিয়েছেন।
শরণার্থীদের বক্তব্য, আফগানিস্তানের যা অবস্থা, তাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারবেন না। অন্য দেশে শরণার্থী হয়েই থাকতে হবে। কিন্তু সেখানে কাজের অধিকার না পেলে জীবনধারণ করাই অসম্ভব। তাদের অভিযোগ, ভারতে পৌঁছানোর পর জাতিসংঘ কার্যালয় থেকে শরণার্থী কার্ড দেয়া হয়। তবে এই কার্ড দেখিয়ে ভারতে থাকা যায়, কিন্তু কাজের সুযোগ পাওয়া যায় না। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের অধিকার থেকেও বঞ্চিত থাকতে হয়।
আর তাই অধিকার আদায়ের এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে আফগান শিশু শরণার্থীরাও। বিক্ষোভে তাদেরকে ‘আমাদের ভবিষ্যত কী?’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। অনেকেরই দাবি, তারা ইউরোপের দেশগুলোতে বা যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে যেতে চায়, কিন্তু জাতিসংঘ সে সুযোগও দিচ্ছে না।
তবে আফগান শরণার্থীরা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, দিল্লিতে তারা আন্দোলন-বিক্ষোভ করলেও এটি আসলে ভারতের বিরুদ্ধে নয়। ভারত তাদের থাকতে দিয়েছে, এজন্য তারা কৃতজ্ঞ। কিন্তু জাতিসংঘ তাদের সঙ্গে ‘বিমাতৃসুলভ আচরণ’ করছে।