ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্ক যেমনই হোক, দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের গল্প শোনা যায় প্রায়ই। তবে সবসময়ই যে বন্ধুভাবাপন্ন থাকেন দুই দেশের ক্রিকেটাররা- এমনটা কিন্তু নয়। খেলার মাঠে দুই দলের ক্রিকেটারদের উত্তপ্ত ঘটনাও কম নেই।
তেমনই একটির শিকার হয়েছিলেন ভারতের মারকুটে ওপেনার ভিরেন্দর শেবাগ। তাও কি না নিজের অভিষেক ম্যাচেই। ১৯৯৯ সালে ঘরের মাঠে মোহালি স্টেডিয়ামে ওয়ানডে অভিষেক হয় শেবাগের। সেদিন পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটার বিশেষ করে শোয়েব আখতার, শহিদ আফ্রিদি, মোহাম্মদ ইউসুফরা গালির বৃষ্টি দিয়ে স্বাগত জানান শেবাগকে।
প্রায় ২২ বছর পর নিজের অভিষেক ম্যাচের স্মৃতিচারণ করে এ কথা জানিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান। একটি রেডিও শো’তে উপস্থিত থেকে শেবাগ বলেন, ‘আমার বয়স তখন ২০-২১ হবে। আমি যখন ব্যাট করতে নামি তখন আফ্রিদি, শোয়েব, ইউসুফসহ পাকিস্তানের সব খেলোয়াড় গালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছিল আমাকে। যেগুলোর বেশিরভাগ আমি আগে কখনও শুনিনি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি অল্প অল্প পাঞ্জাবি বুঝতাম। তাই তখন বুঝতে পারছিলাম যে তারা আমার দিকে গালির বৃষ্টি বর্ষাচ্ছে। কিন্তু আমার তেমন কিছুই করার ছিল না। কারণ সেটা আমার প্রথম ম্যাচ ছিল এবং আমি নিজেই নার্ভাস ছিলাম।’
নিজের অভিষেকের দিন শোয়েব-আফ্রিদিদের জবাব না দিলেও, পরে কোনো ছাড় দেননি শেবাগ। সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন মাঠে প্রায় ২০-২৫ হাজার দর্শক ছিল। আমি কোনোদিন ভাবিনি যে এত মানুষের সামনে খেলব। তো সেদিন কিছু না বললেও, পরে আমি যখন খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলাম, তখন বদলা নিতে ছাড়িনি।’
প্রায় দেড় দশকের ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল শেবাগের। টেস্ট ক্রিকেটে চার সেঞ্চুরির সাহায্যে ৯১.১৪ গড়ে ১২৭৬ রান করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরি ও ছয় ফিফটিতে ৩৪.৫০ গড়ে ১০৭১ রান করেছেন এ ডানহাতি ওপেনার। দলটির বিপক্ষে ভালো করার নির্দিষ্ট কারণও ছিল বলে মনে করেন শেবাগ।
এ বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘যখন ২০০৪ সালে পাকিস্তান সফরে গেলাম, তখন মুলতানে ট্রিপল সেঞ্চুরির মাধ্যমে আগেরবারের সব গালির প্রতিশোধ নিয়ে নেই আমি। যখনই আমি পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছি, স্বাভাবিকভাবেই আমার রক্ত গরম হয়ে যেতো। এ কারণেই ওদের বিপক্ষে আমি ভালো খেলেছি এবং আমার গড়ও অনেক ভালো।’