আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা স্টাডি করেছেন দলটির তিন স্পিনার রশিদ খান, মুজিব উর রহমান আর মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে।
কিন্তু বুধবারের ম্যাচে প্রশ্নে এলেন ফজলে হক ফারুকি।
ম্যাচ শুরুর আগে তামিমরা বলেছিলেন, রশিদ-মুজিব তো আর ৫০ ওভার বল করবেন না। তাদের ২০ ওভার দেখেশুনে খেললেই ম্যাচ বাঁচানো যাবে।
কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে টাইগারদের একাই ধসিয়ে দিলেন ফারুকি।
বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে নিজের প্রথম তিন ওভারেই বাংলাদেশের টপঅর্ডারের ৪ জনকে ফিরিয়ে দেন আফগানিস্তানের এ বাঁহাতি পেসার।
তার ক্ষুরধার বোলিংয়ে ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। অনেকে তো নিশ্চিত পরাজয় হতে যাচ্ছে ভেবে টিভি-ই বন্ধ করে দেন।
পরে অবিস্মরণীয় জুটি গড়ে ২১৬ রানের লক্ষ্য পার করে দেন মিরাজ ও আফিফ।
বাংলাদেশের ইনিংসে তৃতীয় ওভারে দুই ওপেনারকে তুলে নেন ফারুকি। আরও দুই ওভার পর ৪ উইকেটে টাইগারদের রান হয় ১৮। ৪ উইকেটই ফারুকির বাংলাদেশের ইনিংসে ৫ ওভার শেষে এ বাঁহাতি পেসারের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৩-১-৯-৪!
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা বিস্মিত ফারুকির এ পারফরম্যান্সে। প্রশ্ন জেগেছে— কে এই ফজলে হক ফারুকি?
অবশ্য এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) তাকে চিনেছেন অনেকে। বিপিএলে মিনিস্টার ঢাকার হয়ে খেলেছেন এ আফগান তারকা। সাদামাটা পারফর্ম করেছেন তিনি।
আর সেই আফগান পেসারই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যবধান গড়ে দিচ্ছিলেন।
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জমজমাট আসর আইপিএলে দলে থাকলেও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি ফজলে ফারুকির।
২০২০ আইপিএলে পাঞ্জাব কিংস আর ২০২১ আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসে দেখা গেছে তাকে। দুই কিংস ক্লাবে যুক্ত হতে পারলেও নেট বোলার হয়েই ছিলেন ফারুকি। নেট বোলার হিসেবেও দারুণ দক্ষতা দেখান ফারুকি। ক্রিস গেইল, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়নাদের নাজেহাল করেছিলেন তিনি।
যে কারণে এবার আইপিএল নিলামে ৫০ লাখ রুপি ভিত্তিমূল্যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে দলে ভিড়তে পেরেছেন ফারুকি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবুধাবিতে গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে অভিষেক এ পেসারের।
২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই নিজের প্রতিভার জানান দেন ফারুকি। আফগানিস্তানের হয়ে ৪ ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এ পেসার।
এদিকে জাতীয় দলের হয়ে জ্বলে ওঠা ফজল ফারুকি বলেছেন, ‘ফ্র্যাঞ্জাইজি ক্রিকেট ও জাতীয় দলের হয়ে খেলার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ফ্র্যাঞ্জাইজিতে খেলার সময় খেলোয়াড় হিসেবেই খেলতে হয়। জাতীয় দলে খেলার সময় পুরো জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করতে হয়। তাই এখানে অনেক বেশি চাপ থাকে।’