বাংলাদেশ ব্যাংকের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়া শ্রমিকদের ৬২ শতাংশ অদক্ষ এবং ৩৬ শতাংশ আধা দক্ষ। এই তথ্য আমাদের শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে প্রবাসে শ্রমিক নিয়োগ অবিলম্বে কমে যেতে পারে। শিক্ষাগত যোগ্যতার বিচারে প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক পাস করা শ্রমিকদের হার যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ ও ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শ্রমিকের হার ২৩ দশমিক ২ ও ১২ দশমিক ২ শতাংশ। এর সঙ্গে বাংলাদেশে যেসব বিদেশি কাজ করেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখলে আকাশ-পাতাল পার্থক্য লক্ষ করা যাবে। অনেক সময় দেখা যায়, বাংলাদেশে কর্মরত একজন বিদেশি কর্মী গড়ে যে বেতন পান, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি ১০০ শ্রমিকের বেতনও তার সমান নয়। প্রবাসে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১ লাখ ২১ হাজার ৯২৫, যা মোট সংখ্যার ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে তাঁরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হচ্ছেন এবং অনেকে মেয়াদ শেষের আগেই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের বড় অংশই কাজ করেন মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। এসব দেশেও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিদেশে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক পাঠানোর দিকেই মনোযোগ বাড়াতে হবে। সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশে যে শ্রমিকেরা যান, তাঁরা স্থানীয় ভাষা না জানায় নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। বিদেশে যাওয়া শ্রমিকদের সত্যিকারভাবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে, আর সে জন্য আধুনিক ও উন্নত সুবিধাসংবলিত প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার বিকল্প নেই। অন্যথায় ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’কে বাঁচিয়ে রাখাই কঠিন হবে।