দেশের কনটেইনার ডিপোগুলোতে কেমিকেল রাখার ব্যাপারে এখন কোনো আইন বা নীতিমালা তৈরি করা হয়নি। শুধুমাত্র বন্দর কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে এসব কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনার রক্ষাণাবেক্ষণের বিষয়ে ডিপো মালিকদেরকে সতর্ক করেছে। যেকারণে ডিপোতে অন্যান্য সাধারণ পন্যের সাথে কেমিকেল ভর্তি কন্টেইনার একসাথে রাখা হচ্ছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ সংক্রান্ত আইন এবং নীতিমালা সুস্পষ্ট থাকলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ডিপো মালিক জানিয়েছেন, আমদানি করা কেমিকেল ভর্তি কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামানোর সময় তেমন কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কন্টেইনারগুলোর গায়ে কেমিকেল থাকার সতর্কতামূলক কোন নির্দেশনা থাকে না। নীতিমালা না হলে ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত আরো বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেমিক্যাল বহন করা কনটেইনারগুলো ডিপোতে রাখার ক্ষেত্রে অন্য কনটেইনার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হয় না। সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের সময়ও দেখা গেছে সব ধরনের পণ্যবাহী কনটেইনার রাখা হয়েছে পাশাপাশি। কনটেইনারগুলোতে অতি দাহ্য বা বিস্ফোরক দ্রব্য বা বিপজ্জনক এমন ধরনের কোনো লেখাই ছিল না। সেখানে একটি কনটেইনারে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে গিয়ে পাশাপাশি রাখা কনটেইনারগুলোতেও একই ধরনের সাধারণ পণ্য রয়েছে বলে তথ্য জানতে পারে। সেখানে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কনটেইনার রাখা ছিল, সেটা ফায়ার সার্ভিস জানতে পারেনি। সাধারণত কেমিক্যাল থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস ফোম ব্যবহার করে। আগুন নেভাতে পানি ব্যবহার করলে, সেই আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং অধিক তাপ উৎপন্ন হয়। সীতাকুণ্ডের ঘটনায় কেমিক্যাল রাখা কনটেইনার বিস্ফারিত হলে অগ্নিকাণ্ড ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে।