যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে টিভি সংবাদের লাইভে ঢুকে পড়া রুশ নারী সাংবাদিক মেরিনা ওভিসইয়াননিকোভাকে জরিমানা করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি ‘চ্যানেল ওয়ান’-এর সাংবাদিক মেরিনাকে ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর জরিমানা করে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁকে মোট ৩০ হাজার রুবল জরিমানা করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৩ হাজার ৬০০ টাকা।
স্থানীয় সময় গত সোমবার সন্ধ্যায় ‘চ্যানেল ওয়ান’-এ লাইভ সংবাদ চলাকালে সেটে ঢুকে পড়েন মেরিনা। সংবাদ উপস্থাপকের পেছনে তাঁকে একটি যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘যুদ্ধ নয়’।
ঘটনার পর মেরিনাকে আটক করা হয়। তাঁর ভাষ্য, তাঁকে ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি দুদিন ঘুমাতে পর্যন্ত পারেননি। এমনকি তাঁকে আইনি সহায়তা নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি।
খবরে বলা হয়, ভিডিও বার্তাসংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য মেরিনাকে ৩০ হাজার রুবল জরিমানা করা হয়েছে।
মেরিনার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুষ্ঠান আয়োজনের অভিযোগ আনা হয়। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
ভিডিওতে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রুশ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান মেরিনা। তিনি বলেন, এসব পাগলামি থামানোর ক্ষমতা কেবল রুশ জনগণেরই রয়েছে।
মেরিনা আরও বলেন, ‘কোনো কিছুর ভয় পাবেন না। তাঁরা আমাদের সবাইকে কারাগারে পুরতে পারবে না।’
টিভি লাইভে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোয় মেরিনার বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ আনা হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
নতুন ফৌজদারি আইনে গুরুতর অভিযোগে মেরিনাকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন ওই ফৌজদারি আইনে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানকে ‘আগ্রাসন’ বলা, যুদ্ধ নিয়ে ‘ভুয়া সংবাদ’ ছড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আদালতে শুনানির পর মেরিনা সাংবাদিকদের বলেন, দুই দিন ঘুমহীন থাকার পর তাঁর এখন বিশ্রাম প্রয়োজন।
মেরিনা বলেন, ‘১৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আটকাবস্থায় পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সঙ্গে আমাকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ দেয়নি।’
আদালত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় মেরিনা বলেন, ‘এটা ছিল আমার যুদ্ধবিরোধী সিদ্ধান্ত। আমি নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি চাইনি যে রাশিয়া এই আগ্রাসন শুরু করুক। এটা খুবই ভয়ংকর।’
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর খোদ রাশিয়াতেই যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশটিতে অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুদ্ধবিরোধী এসব বিক্ষোভের মধ্যে মেরিনার ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ আলোচিত হচ্ছে।