ব্রিটেন ও ফ্রান্স জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। দীর্ঘ শতাব্দী ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এটি এক ঐতিহাসিক ঘটনা হলেও কূটনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপও বটে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে ‘বল নয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠা’ করতে হবে। সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতায় নেয়া এ সিদ্ধান্ত দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে টিকিয়ে রাখার একটি প্রচেষ্টা।
তবে ইসরায়েল এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ। দেশটির শীর্ষ নেতারা একে হামাসকে পুরস্কৃত করার সমান বলে মনে করছেন। কেউ কেউ এমনকি পশ্চিম তীরের অংশ সরাসরি দখল করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা চিরতরে নষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জোট সরকার বরাবরই দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিরোধী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপের এ উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে সম্মেলনে অংশ নিতে দেননি। এতে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের অন্যতম বড় বিভক্তি স্পষ্ট হলো।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন, যদি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ব্যর্থ হয়, তবে ফিলিস্তিনিরা দমন-পীড়নের মধ্যে থেকে যাবে। তিনি বলেন, কোনোভাবেই তাদের “সমষ্টিগত শাস্তি, অনাহার কিংবা জাতিগত নির্মূল” ন্যায্য হতে পারে না।
গাজায় ইসরায়েলের নতুন সেনা অভিযান, পশ্চিম তীরে বাড়তে থাকা বসতি স্থাপন ও সহিংসতার কারণে ইউরোপ মনে করছে সামরিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। তাই কূটনীতিই একমাত্র বিকল্প। এ প্রক্রিয়ায় আরব লীগ ও সৌদি আরবও অংশ নিয়েছে, যারা হামাসকে নিরস্ত্র হয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ইউরোপীয় দেশগুলো অতীতে যেমন প্রভাবশালী ছিল, এখন আর ততটা নয়। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষে নেই।