ইরাকের মধ্যাঞ্চলে পানির ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট সমাধানের দাবি স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ করছে।
দেশটির বাবেল প্রদেশে ভয়াবহ খরতাপে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এএফপি ও বাসস ওই তথ্য জানায়। পানির সংকটের কারণে শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ করেন।
৪ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রবল প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বছরজুড়ে খরা, ধারাবাহিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং নদীর পানিপ্রবাহ হ্রাসের মুখোমুখি হচ্ছে প্রাচীন সভ্যতার এই দেশ।
সরকারের পক্ষ থেকে ইরান ও তুরস্কে নির্মিত উজানের বাঁধগুলোকেও দায়ী করা হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে ইরাককে সেচ সুবিধা দেওয়া শক্তিশালী ফোরাত ও দজলা নদীর প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমিয়ে দিয়েছে এসব বাঁধ।
হিল্লা শহরের নিকটবর্তী আল-মাজরিয়েহ গ্রামে তিনশোরও বেশি বাসিন্দা পানির সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে। এর একদিন আগেই পুলিশ একই দাবিতে হওয়া আরেকটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
৬৬ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী সাদুন আল-শাম্মারি বলেন, ‘আমরা ৩৫ দিন ধরে পানি পাচ্ছি না, অথচ এর আগেও দীর্ঘদিন ধরে সংকট চলছে।’৩৫ বছর বয়সী কাহতান হুসেইন বলেন, ‘এটি আমাদের মৌলিক অধিকার, আমরা এর বেশি কিছু চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো পানি নেই, পাইপলাইন পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে।’
ইরাকের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছর ১৯৩৩ সালের পর থেকে অন্যতম শুষ্ক বছর। বর্তমানে দেশটির পানির রিজার্ভ ক্ষমতার মাত্র আট শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, উজানের দেশগুলোর সহযোগিতার অভাব এবং পানির প্রবাহে অব্যাহত হ্রাস সংকটকে আরও গভীরতর করবে এবং দেশের পানির নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
দক্ষিণ ইরাকের দিওয়ানিয়া প্রদেশেও বহু গ্রামে পানির সংকট বহু বছর ধরে চলমান। সেখানে সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ করেছে। খাবার পানি এবং কৃষিকাজ উভয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি দূর করার দাবি জানায় স্থানীয়রা।
খাবার পানি বাঁচাতে কৃষিকাজে পানি ব্যবহার ব্যাপকভাবে সীমিত করেছে দেশটির সরকার।