যারা দেশের জন্য নিজের পরিবারের জন্য সব মায়া ত্যাগ করে পড়ে থাকে প্রবাসে, তাদের কথাকে আমরা ভেবে দেখেছি ? তাদের কঠিন জীবন যুদ্ধের চিত্র আমরা কি কখনো দেখেছি ? দেশের সব মায়া ভুলে কঠোর পরিশ্রমের দিনাতিপাত করা। প্রবাস জীবন মানেই নিঃসঙ্গতা। ১২-১৫ ঘণ্টা দৈনিক কাজ করা। প্রিয়জনকে কাছে না পাওয়া। বাংলার সুবাস থেকে বঞ্চিত হওয়া। অর্ধাহারে বা অনাহারে থাকা। মা বাবার শেষ মুখটা না দেখা। সন্তানের জন্ম না দেখা। কতই না প্রবাসীদের ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। তারপরও এরা হাসি মুখে দেশের ও দেশের মানুষের কথা ভেবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে দ্বিধা করে না।
আপনারা যারা এমনটি করছেন তারা একটিবারও কি ভেবে দেখেছেন, যারা দেশ থেকে বিদেশে গিয়ে দেশের বেকারত্বের হার কমায় তারা কারা? দেশের মোট জাতীয় আয়ের প্রায় ১৫ শতাংশইতো প্রবাসীদের অবদান।
কিন্তু বিনিময়ে এরা কি পায়? কেন এরা সর্বত্র অবহেলার স্বীকার হয়? বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক থেকে শুরু করে, বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসসহ বাংলাদেশে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রবাসীরা শুধুই অবজ্ঞারই মুখে পড়ে। প্রবাসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক কর্মকর্তাদের শাসানি খেতে হয়। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারা তো বাংলাদেশি প্রবাসীদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না।
বাংলাদেশে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা প্রবাসীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, তা সবারই জানা।
বাংলাদেশের দালালের প্রতারণার স্বীকার হয়ে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই অনেকেই দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। এরা দেশের বোঝা হতে নারাজ। প্রিয়জনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য হাসি মুখে প্রতিনিয়ত কষ্ট করে যাচ্ছেন। দেশের কর্তৃপক্ষ কি এদের জন্য কিছুই করতে পারে না? এরা দেশের জন্য অনেক দেয়, কিন্তু কেন এদের কিছুই মিলে না?দেশে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া তাদেরকে সম্মান করা এবং তাদের জন্য কল্যাণমুখী কাজ করার এখনই সময়, তাই আসুন প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করি এই রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বাঁচিয়ে রাখি, দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি সচল রাখি। প্রবাসীদের অবহেলা নয় ভালবাসতে শিখুন।