এ যেন এক অচেনা নগরী। নেই চিরচেনা যানজট, যানবাহনের শব্দ কিংবা হর্ন। মানুষের উপস্থিতিও নগণ্য। অতি জরুরি কাজে যারা বের হচ্ছেন তারাও দ্রুত কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার তাগিদে পা চালাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে দেখা মেলে দুএকটি মোটরসাইকেল কিংবা সিএনজি অটোরিকশার।
তবে সড়কে আজ রিকশার ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। গণপরিবহন না থাকায় ফাঁকা সড়কে বেশ দাপট নিয়েই চলতে দেখা গেছে রিকশাচালকদের। অন্যদিকে আজ সড়কে মানুষের তুলনায় রিকশার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে— এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সাইন্সল্যাব, আজিমপুর, কাঁটাবনসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকার সড়কে অন্যদিন যেমন মানুষের উপস্থিতি আর গণপরিবহন চলাচল করত, আজ তেমনটি নেই।
কথা হয় রাসেল মিয়া নামের এক রিকশাচালকের সঙ্গে। বললেন, সকাল থেকে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছি। অনেক রিকশা আজ রাস্তায়। কিন্তু সেই তুলনায় যাত্রী নেই বললেই চলে। দূরের কোনো খ্যাপ নেই, যা আছে সব কাছাকাছি। ৩০-৪০ টাকার খ্যাপ। বিকেলের দিকে যাত্রী বাড়তে পারে। সেই আশায় বসে আছি।
আবু হানিফ নামের আরেক রিকশাচালক বলেন, সকালের দিকে কমলাপুর থেকে দুজনকে নিয়ে ধানমন্ডি এসেছিলাম। এরপর আর কোনো দূরের যাত্রী পাইনি। সব কাছাকাছি যাত্রী। এখনও নিউমার্কেটে বসে আছি, মতিঝিল-আরামবাগের দিকের কোনো যাত্রী পেলে চলে যাব। সব যাত্রী ওই দিকে। এদিকে ফাঁকা।
এসব এলাকায় সকাল থেকে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়ার পর ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে কিছু দোকানপাট। মার্কেটগুলোতে কিছু দোকান খোলা থাকলেও অধিকাংশ দোকানই বন্ধ দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকানের শ্রমিক বা কর্মচারীরা দূর-দূরান্ত থেকে আসার জন্য গণপরিবহন পাচ্ছে না। যার ফলে দোকান খুলতে দেরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তাঘাটে বের হওয়া আজ নিরাপদ নয়। সেজন্যই শ্রমিক-কর্মচারীদের আসতে নিষেধ করেছি। পুলিশের তল্লাশির পর হুটহাট যদি কাউকে সন্দেহ করে ধরে নিয়ে যায় তাহলে সেই ঝামেলা আবার আমাদেরই পোহাতে হবে। সেজন্য আজ আমি নিজেই এসে দোকান খোলা রেখেছি। কিছুক্ষণ পর চলে যাব। মার্কেটে লোকজনের উপস্থিতি নেই। সবার মধ্যেই অল্পস্বল্প আতঙ্ক কাজ করছে। দোকান খোলা রেখেও তো লাভ নেই।