প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম দিকে যে আশা দেখিয়েছিল তা পরেও বজায় রয়েছে; এতে মাস শেষে প্রবাসী আয় বেড়ে হয়েছে ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা ১৪ মাসের সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, এ সময়ে আগের অর্থবছরের একই মাস জুলাইয়ের চেয়ে রেমিটেন্স বেড়েছে ১২ শতাংশের মত। দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে গত বছরের জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।
জুলাই শেষে রেমিটেন্সের পরিমাণ আগের মাস জুনের চেয়ে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ওই মাসে এসেছিল ১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে এর চেয়ে বেশি ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে রেমিটেন্স এসেছিল।
ভয়াবহ মহামারির মধ্যেও প্রবাসীরা গড়ে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার করে মুদ্রা পাঠিয়েছেন দেশে। ২০১৯-এ তাঁদের পাঠানো মুদ্রার পরিমাণ ছিল ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আগের অর্থবছর ছিল প্রায় সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থে প্রবাসীদের পরিবারগুলোই কেবল উপকৃত হয়নি, বৈদেশিক মুদ্রার শক্তিশালী রিজার্ভ অর্থনীতিরও বড় ভরসা। দেশের জাতীয় আয়ে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের অবদান প্রায় ৬ শতাংশ। পারিবারিক লোকসংখ্যার হিসাবে প্রবাসী আয়ের সরাসরি সুবিধাভোগী দেশে চার-পাঁচ কোটি মানুষ।
লাখ লাখ পরিবারের প্রতি মাসের প্রধান ভরসা বিদেশে থাকা মানুষটির অর্থ। এই টাকা না পেলে তারা সব স্বস্তি হারাবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ রকম পরিবারের প্রায় ৫৭ ভাগের আয়ের একমাত্র উৎস বিদেশে থাকা মানুষটির টাকা।
এই পরিবারগুলোকে সরকার যে কাগজপত্রে সচ্ছল হিসেবে দেখাতে পারছে, সেটা কিন্তু ওই পরিবারের বিদেশে থাকা মানুষটির ফোঁটা ফোঁটা ঘামে। একই ঘামে ভেজা পথে আমদানি ব্যয় মেটানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ আজ উদ্বেগহীন। তাঁদের জন্য আমরা কী করছি? তাঁদের আজ ও আগামীকাল নিয়ে আমাদের সুদূরপ্রসারী ভাবনা কী?