করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা ছাড়া ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক নিয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আগামীতে নির্দেশনা জারি করবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রথম ডোজ টিকা না নেওয়া শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারবে মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে। টিকা তো এখন একেবারে গ্রাম পর্যন্ত অ্যাভেইলঅ্যাবল হয়ে গেছে। এজন্যই এটা ইম্পোজ করে দেওয়া হচ্ছে। টিকা দিয়ে স্কুলে যাওয়া নিরাপদ হবে, প্রমোশন ক্যাম্পেইনে সেটাই বলা হবে। প্রমোশন ক্যাম্পেইনের জন্য স্বাস্থ্য, পিআইডি, স্থানীয় সরকার, প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইমাম সাহেবরাও যাতে খুতবায় টিকার কথা বলেন, সেটাও ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যে শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন না নেবে, তারা স্কুল-কলেজে আসতে পারবে না। টিকা নেওয়ার জন্য মোটিভেশনও করতে বলা হয়েছে, ইম্পোজিশনও করতে বলা হয়েছে। উনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেনি। বিশ্ববিদ্যালয় তো আলাদা কর্তৃপক্ষ।’
‘বলা হয়েছে, টিকা নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য অপেক্ষার দরকার নেই। জন্মনিবন্ধন ও এনআইডি বা যে কোনো একটি পরিচয়পত্র নিয়ে গেলেই তারা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে।’
গত ৩ জানুয়ারির মিটিংয়েই শিক্ষা মন্ত্রণালয় টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তারা ইতোমধ্যে মৌখিক নির্দেশনাও দিয়েছে। সচিব বদলি হওয়ায় হয়তো লিখিত নির্দেশনা দিতে দেরি হচ্ছে। ১২ বছরের নিচের বয়সীরা এখনো আমাদের দেশে (টিকা দেয়ার জন্য) কাউন্টে আসেনি। আমেরিকায় খুবই রেস্ট্রেক্টেড কিছু হয়েছে, বাকি কোথাও হয়নি।’
সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জনসমাগম সীমিত রাখতে হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যতামূলক করতে হবে। আমরা কথা বলছি, আমাদের টেকনিক্যাল লোকজনরা একমত হলে এমনও হতে পারে, তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রেস্ট্রিকশন দিয়ে দেবে, এত সংখ্যকের বেশি থাকতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বুস্টার ডোজের বিষয়ে তাদের (স্বাস্থ্য বিভাগ) চিন্তা করতে বলা হয়েছে। ৬০ বছর পর্যন্ত থাকবে নাকি কমানো যায়, যেহেতু আমাদের সাফিসিয়েন্ট আছে। গণপরিবহনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যদি সংক্রমণ আরও বাড়ে, তাহলে হয়তো ৫০ শতাংশ (আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন) করা হবে। ওটা এখনো হয়নি (চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত)।’
গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিলে ভাড়া বাড়ানো হয়। মানুষের আয় তো বাড়ে না- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা বিআরটিএ-কে বলে দেবো, কোনো ভাড়া বাড়ানো যাবে না।’
তবে লকডাউন নিয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।