করোনার দুরবস্থা কাটিয়ে ব্যাপকভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প। আবার বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্ব›দ্বী চীন ও ভিয়েতনাম রয়েছে বেকায়দায়। এমন পরিস্থিতির সুবিধা পাচ্ছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। ক্রেতারা এখন বাংলাদেশমুখী। পোশাক রপ্তানি থেকে আয় বেড়ে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। পোশাক খাতের এই সুসময়ে আসে নতুন ধাক্কা। সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির কারণে শঙ্কায় পড়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মহামারির ধাক্কা সামলে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের বিক্রি বাড়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই গত অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে পণ্য রপ্তানি করে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এ পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পোশাক খাতে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা; যেখানে প্রবৃদ্ধি ৩৬ শতাংশ। এ খাতে ৩ হাজার ৫১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা হয়, যা ইতোমধ্যেই অতিক্রম করেছে। এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, অর্থবছরের বাকি দুই মাসে আরো ৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। সবমিলিয়ে এবার ৪২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে পোশাক রপ্তানি। তিনি বলেন, এ বছর সুতার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য কাঁচামালের খরচ বেড়ে গেছে। এসব কারণে গ্রোথ বেশি দেখা যাচ্ছে। রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির পেছনে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়াও অবদান রাখছে।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর দেশের তৈরি পোশাক খাতে শুরু হয় ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার কার্যক্রম। উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স এবং ইউরোপের
ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রথমে প্রতিটি কারখানা পরিদর্শনে দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ দেড় হাজার কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদের অতিরিক্ত আরো দুই বছর কার্যক্রম সফলভাবে শেষ করা হয়। সমন্বিত এসব উদ্যোগের ফলে বিশ্বের নিরাপদ পোশাক খাতের দেশ হিসেবে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ২০২০ সালে করোনার আঘাতে আবার কিছুটা লণ্ডভণ্ড হলেও আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। দীর্ঘদিন শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশের মর্যাদা ধরে রাখছে চীন। এদিকে ভিয়েতনাম দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানিকারক দেশ। তবে পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশের অনুকূলে। এ দুই দেশ থেকে রপ্তানি আদেশ এখন বাংলাদেশে সরিয়ে নিয়ে আসছে ব্র্যান্ড এবং ক্রেতারা। বিপুল কার্যাদেশ পাচ্ছিল দেশের পোশাক খাত। এ কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও এ খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখায় উদ্যোক্তারা। সুযোগ কাজে লাগাতে টিম গ্রুপ, ঊর্মি গ্রুপ, চট্টগ্রামভিত্তিক আরডিএম গ্রুপ ও রিয়েল এস্টেট জায়ান্ট শেলটেকের মতো কয়েকটি বড় বড় শিল্পগ্রুপ নিজেদের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন কারখানা স্থাপন করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে চ