পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেয়া ডেপুটি স্পিকারের আদেশ অবৈধ। এমন রায় দিয়েছে দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। এমনকি দেশটির জাতীয় পরিষদ বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা দিয়ে তা খারিজ করে দেওয়া ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির আদেশ ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রেসিডেন্টের জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়া বৈধ কিনা তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানি শেষে এই রায় দেয় পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের একটি বৃহত্তর বেঞ্চে এ শুনানি চলে। বাকি চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি ইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম, বিচারপতি মুনিব আখতার ও বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল।
এর আগে, শুনানি চলাকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেওয়া ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির আদেশের কপিতে স্পিকার আসাদ কায়সারের স্বাক্ষর থাকার কথা উঠে আসে। বিষয়টি নজরে আনেন বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল।
ডেপুটি স্পিকারের আদেশের বৈধতা নিয়ে চলা স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) শুনানিতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছিলেন তাদের আইনজীবী নাইম বুখারি। তখন বিষয়টি নজরে আনেন এই বিচারপতি।
এর আগে, অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আজকের শুনানি নিয়ে সহিংসতা রুখতে সুপ্রিম কোর্টের আশেপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়।
গত ৮ মার্চ পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে বিরোধী দলগুলো। গত ২৮ মার্চ জাতীয় পরিষদে আলোচনার জন্য অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। বিধি অনুযায়ী, প্রস্তাব উত্থাপনের পর আলোচনা শুরু করতে ন্যূনতম তিন দিন থেকে সর্বোচ্চ সাত দিন সময় নেওয়া যায়। প্রস্তাব উত্থাপনের পর তা নিয়ে পার্লামেন্টে ভোট প্রদানের তারিখ বেশ কয়েকবার পিছিয়ে দেয়া হলে গেল রবিবার তা খারিজ করে দেয় ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শুনানি গ্রহণ করেন সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি। ইমরানের বিরুদ্ধে আর্থিক অব্যবস্থাপনা এবং পররাষ্ট্রনীতির ভুলের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।