থাইল্যান্ডে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রায়ুতের পদত্যাগ চাইছে দেশটির মানুষ। খবর রয়টার্সের।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, প্রথম দিকে মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সম্প্রতি তা বাড়তে শুরু করায় অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়ছে। রাজধানী ব্যাংককে বিজয় স্মৃতিস্তম্ভের কাছের সড়ক কন্টেইনার দিয়ে বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের প্রায়ুতের বাসভবনমুখী পদযাত্রা ঠেকাতে সড়কটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি, টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
ব্যাংকক পুলিশের মুখপাত্র কৃষ্ণ পট্টানাচারোয়েন বলেছেন, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য। তবে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পিং পং বোমা, পাথর এবং মার্বেল ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পরে বিক্ষোভ স্থল থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে মোটরসাইকেল এবং অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেয়া হয়। এরাওয়ান ইমার্জেন্সি মেডিকেল সেন্টার বলছে, বিক্ষোভ-সহিংসতায় কমপক্ষে দুজন বেসামরিক এবং পুলিশের তিন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
২৩ বছর বয়সী আওম নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা প্রায়ুতের পদত্যাগ চাই। কারণ জনগণ টিকা পাচ্ছে না। নিপীড়নের আশঙ্কায় পুরো নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান এই বিক্ষোভকারী। তিনি বলেন, আমাদের কাজ নেই, উপার্জনও নেই। প্রতিবাদ করা ছাড়া আমাদের কোনও উপায় নেই।
৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের এই দেশটির মাত্র ৬ শতাংশ মানুষকে এখন পর্যন্ত পুরোপুরি টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। রাজধানী ব্যাংককসহ দেশটির বেশিরভাগ এলাকায় লকডাউনের পাশাপাশি রাত্রিকালীন কারফিউ জারি আছে। বর্তমানে পাঁচজনের বেশি মানুষের একত্রিত হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
শনিবারও থাইল্যান্ডে একদিনে রেকর্ড প্রায় ২২ হাজার জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া একই দিনে মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের; যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে মহামারির শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৫২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং আর প্রাণ গেছে ৬ হাজার ৬৬ জনের।