শুক্রবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. অস্ট্রেলিয়া
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আফ্রিকা
  6. আবহাওয়া
  7. আমেরিকা
  8. আয়ারল্যান্ড
  9. ইউক্রেন
  10. ইউরোপ
  11. ইতালি
  12. কানাডা
  13. খেলাধুলা
  14. গ্রাম বাংলা
  15. চিত্র বিচিত্র

চিলির সমাজতান্ত্রিক সরকারের বদনাম করতে যে অনিয়ম করেছিল বিশ্বব্যাংক

প্রতিবেদক
Probashbd News
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১ ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ
চিলির সমাজতান্ত্রিক সরকারের বদনাম করতে যে অনিয়ম করেছিল বিশ্বব্যাংক

Spread the love

২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস সূচকে চিলির অবস্থান ছিল ৩৪তম। ২০১৭ সালে এসে সেই চিলি পিছিয়ে চলে যায় ৫৫তম অবস্থানে। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি চিলির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মিশেল বাশলে। তিনি ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর জেরে বিশ্বব্যাংকের এ সূচক তৈরির অনিয়ম প্রথম ধরা পড়ে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে চিলি ৩৪তম অবস্থানে ছিল। ২০১৭ সালে তা পিছিয়ে ৫৫তম অবস্থানে নেমেছে। এরপর চিলির রাষ্ট্রপতি ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। চিলির কর্মকর্তারা বিশ্বব্যাংকের সমালোচনা করে বলেন, সংস্থাটি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ক্ষেত্রে তাদের বার্ষিক ‘ডুয়িং বিজনেস’ প্রতিযোগিতামূলক র‍্যাঙ্কিংয়ে অন্যায় আচরণ করেছে।

আসলে ২০১৪ সালে চিলির প্রেসিডেন্ট হন মিশেল বাশলে। এরপরে তাঁর শাসনামলের পরবর্তী তিন বছরই ডুয়িং বিজনেস সূচকে চিলির অধঃপতন হয়েছে। ২০১৫ সালে ৪১, ২০১৬ সালে ৪৮ ও ২০১৭ সালে ৫৫ হয়ে যায় চিলির অবস্থান। চিলির প্রেসিডেন্টের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি পর্যালোচনায় নেওয়া হয়। পরে বিশ্বব্যাংকের সে সময়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল রোমার অসংগতির কথা জানান। তাঁর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাংকের একজন সাবেক পরিচালক এমনভাবে জালিয়াতি করে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচক নির্ণয়ের পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন, যাতে চিলির ক্ষমতাসীন সমাজতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়। পল রোমার প্রতিবেদনের পদ্ধতিতে পরিবর্তনের জন্য চিলির কাছে ক্ষমা চান। তিনি স্বীকার করেন বাশলের অধীন ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এই র‌্যাঙ্কিং রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত। তথ্য সংগ্রহে পদ্ধতিগত পরিবর্তনের ফলে প্রতিবেদনে চিলির অবনমন হতে পারে।

সে সময় এ বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বক্তব্য দেন পল রোমার। তিনি বলেন, ‘আমি চিলি এবং অন্য যেকোনো দেশে যেখানে আমরা ভুল ধারণা দিয়েছি, তাদের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাই। আমার দায় রয়েছে। কারণ, আমরা বিষয়গুলো যথেষ্ট পরিষ্কার করিনি। বিশ্বব্যাংক অতীতের রিপোর্টগুলো সংশোধন করার পদ্ধতি শুরু করছে এবং পদ্ধতি পরিবর্তন না করে র‍্যাঙ্কিং কেমন হবে, তা পুনরায় প্রকাশ করবে।’ রোমার বলেন, সংশোধনগুলো চিলির জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। কারণ, তাদের অবস্থান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্থিতিশীল ছিল। বিশ্বব্যাংকের কর্মীদের রাজনৈতিক প্রেরণার কারণে বিষয়টি কলঙ্কিত হয়েছে। কারণ, বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদন ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কভারেজ পায়। তবে এমন মন্তব্য করায় পল রোমারকে পদত্যাগ করতে হয়।

প্রতিবেদনের পদ্ধতিগত পরিবর্তন করা সেই সাবেক পরিচালক ছিলেন অগাস্টো লোপেজ-ক্লারোস। চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক লোপেজ-ক্লারোস সে সময় বিশ্বব্যাংকের দায়িত্ব থেকে ছুটি নিয়ে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সময় তাঁর ওই কাজের জন্য প্রেসিডেন্ট মিশেল বাশলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। ২০১৮ সালে মার্চে দায়িত্ব থেকে সরে যান মিশেল বাশলে। সমাজতান্ত্রিক দল থেকে ক্ষমতা চলে যায় কনজারভেটিভ দলের কাছে। দায়িত্ব পান প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা।

পল রোমারের ক্ষমা চাওয়ার পর ওই সময় এক টুইটে মিশেল বাশলে লেখেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রতিযোগিতামূলক র‌্যাঙ্কিং তৈরিতে যা ঘটেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে র‌্যাঙ্কিং পরিচালনা করে, তা নির্ভরযোগ্য হওয়া উচিত। কারণ, তারা বিনিয়োগ ও দেশগুলোর উন্নয়নে প্রভাব ফেলে।’ তিনি বলেন, তাঁর সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাংকের কাছে সম্পূর্ণ তদন্তের অনুরোধ জানাবে।

গত বছরের আগস্টে বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহে পদ্ধতিগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অসংগতি থাকতে পারে। কিন্তু তা এখনো চিহ্নিত হয়নি। তাই প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য সংগ্রহে পদ্ধতিগত পরিবর্তন ও অসংগতির কারণে যেসব দেশ অধিক প্রভাবিত হয়েছে, সেসব দেশের সঠিক তথ্য পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আর এ কারণে গত বছরের অক্টোবরে ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্স তৈরি স্থগিত করে তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই সূচক আর তৈরি না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবছর বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আইএফসি ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট তৈরি করে। ব্যবসা শুরু, বিদ্যুৎ–সংযোগ, সম্পত্তি নিবন্ধন, কর ব্যবস্থাসহ কয়েকটি নির্দেশক বা মানদণ্ডের প্রতিটির ওপর ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর গড় করে চূড়ান্ত স্কোর নির্ণয় করা হয়। স্কোরের ভিত্তিতে দেশগুলোর অবস্থানের তালিকা করা হয়।

সর্বশেষ - প্রবাস

আপনার জন্য নির্বাচিত
Translate »