পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মৃত্যুর গুঞ্জন ঘিরে দেশটিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আদিয়ালা কারাগারে বন্দী এই নেতার বর্তমান অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়ায় এবং ‘জীবিত থাকার প্রমাণ’ না মেলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাওয়ালপিন্ডিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাওয়ালপিন্ডিতে আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। ডেপুটি কমিশনার ড. হাসান ওয়াকার চিমা স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির যেকোনো সমাবেশ, মিছিল বা প্রতিবাদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
জেলা ইন্টেলিজেন্স কমিটির প্রতিবেদনের বরাতে আদেশে উল্লেখ করা হয়, কিছু গোষ্ঠী বড় ধরনের জমায়েত ও সহিংসতার পরিকল্পনা করছে, যা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানের পরিবার অভিযোগ করেছে, গত তিন সপ্তাহ ধরে আদিয়ালা কারাগারে বন্দী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বা দলীয় নেতাদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। স্বজনদের আশঙ্কা, সাবেক এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কিছু লুকাচ্ছে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান বলেন, “আপনার বাবা নিরাপদ আছেন, আহত আছেন, নাকি বেঁচে আছেন—এটা না জানা এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণা।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবারের কাউকে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসককেও গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পরিবার বলছে, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তার ‘বেঁচে থাকার দৃশ্যমান কোনো প্রমাণ’ তারা পাচ্ছেন না।
পারিবারিক উদ্বেগ ও ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার এক বিবৃতিতে তারা নিশ্চিত করেছে, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারেই আছেন এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা ৭২ বছর বয়সী ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কয়েকটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ইমরান খানের দাবি, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।











