ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় খুলনায় স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। উপকূলে ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র।
রোববার রাতে খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে জেলায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দাকোপে ১১৮, বটিয়াঘাটায় ২৭, কয়রায় ১১৭, ডুমুরিয়ায় ২৫, পাইকগাছায় ৩২, তেরখাদায় ২২, রূপসায় ৩৯, ফুলতলায় ১৩ ও দিঘলিয়ায় ১৬টি।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জরুরি শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা, সাইক্লোন শেল্টারে যারা আসবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আগতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কাজ চলছে।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সোমবারের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আগতদের জন্য শুকনো খাবার, চাল ও টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার দুপুর ২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা করা হবে।
এদিকে খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় সিত্রাংয়ের প্রভাব শুরু হয়েছে। রোববার সকাল থেকে উপকূল এলাকা মেঘলা রয়েছে। সেই সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। দুপুরের পর থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৭ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কিছু এলাকা এর আওতায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার রাতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।