সশস্ত্র দুর্বৃত্তের তাক করা তিন রাউন্ড গুলির একটিও বিদ্ধ হয়নি বাংলাদেশি ট্রাফিক এজেন্ট মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের (৩৫) শরীরে। প্রথম গুলির শব্দ শুনেই তিনি নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানের ব্যস্ততম স্ট্রিটে শুয়ে পড়েন। দ্বিতীয় গুলি তার পায়ের কাছ দিয়ে চলে যায়। তৃতীয় গুলি কাছে আসার আগেই দৌড়ে নিউইয়র্ক পুলিশের গাড়ির কাছে যান। সেই গুলি বিদ্ধ হয় রাস্তার পার্শ্ববর্তী গাছে।
১৭ আগস্ট স্থানীয় বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে লেক্সিংটন এভিনিউ এবং ১১২ স্ট্রিটে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণের ঘটনায় পথচারীরাও হতবাক। কেউ ভেবেছেন হয়তো সিনেমার শুটিং চলছে। কারণ, এই এজেন্ট সে সময় কোনও গাড়িতে জরিমানার টিকিট দেননি। তাছাড়া ইন্টারসেকশনে রাস্তার জ্যাম কমানোর অহর্নিশ প্রয়াসে ছিলেন তিনি। গুলি বর্ষণের সংবাদ পেয়েই আশপাশের টহল পুলিশ সেখানে জড়ো হয় এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বন্দুকধারী দৃর্বৃত্তকে পাকড়াও করতে সক্ষম হয় বলে এ সংবাদদাতাকে জানালেন ভীত-সন্ত্রস্ত্র ট্রাফিক এজেন্ট ফারুক হোসেন।
ঝিনাইদহের সন্তান ফারুক মাত্র চার মাস আগে ঢুকেছেন এই চাকরিতে। বেআইনিভাবে পার্ক করার জন্য অনেকের গাড়িতে জরিমানার টিকিট দিয়েছেন কিন্তু কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি। কোনও টিকিট ইস্যু না করেও এমনভাবে আক্রান্ত কেন হলেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। পরপর তিন রাউন্ড গুলি তাকে লক্ষ্য করে ছোঁড়ায় প্রতিয়মান হয় যে, তাকে টার্গেট করেই আক্রমণ করা হয়েছিল। পুলিশ গ্রেফতারকৃত দুর্বৃত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মোটিভ উদঘাটনের।
জানা গেছে, ফারুকের স্ত্রী এবং একপুত্র ও এক কন্যা বাংলাদেশে বাস করেন। তিনি পরম করুণাময়ের শোকরিয়া আদায় করছেন গুলি থেকে বেঁচে যাওয়ায়।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাফিক ইউনিয়ন-সিডব্লিউ লোকাল-১১৮২’র পক্ষ থেকে একটি পোস্টিং দেওয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কর্তব্যরত সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ এবং মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের জন্যে সকলের দোয়া চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক পুলিশে তিন হাজারের মত ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্টের প্রায় এক হাজার জনই হলেন বাংলাদেশি। প্রতিনিয়ত তারা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।