ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এ রিট দায়ের করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী হলেন, ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম।
রিটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটের বিবাদী করা হয়েছে।
গত ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশন।
‘আউস্টেড বাংলাদেশ’স প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা, হার সান সজীব ওয়াজেদ জয় অ্যান্ড নিস টিউলিপ সিদ্দিক এমবেজেলড ৫ বিলিয়ন ডলার্স ফ্রম ওভারপ্রাইজড ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার্স রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট থ্রো মালয়েশিয়ান ব্যাংকস’ শিরোনামে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রাশিয়ার রোসাটম মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে মধ্যস্থতা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। শেখ হাসিনা এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র অদূরভবিষ্যতে দেশের বিদ্যুতের ২০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি ভিভিইআর ইউনিট ব্যবহার করে ২০২৪ সালের মধ্যে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।
গণমাধ্যমে এমন ইতিবাচক প্রচারণার আড়ালে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কেনার জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ লোপাট করেছেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এর নির্মাণব্যয় তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে গোপনে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছে রাশিয়া। মালয়েশিয়ার ওইসব ব্যাংকে রাশিয়ার বিশেষ তহবিল থেকে এ অর্থ এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পারমাণবিক খাত নিয়ে কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা এবং নির্মাণকাজের দেখাশোনা করতে পারেন-এমন পেশাদার ব্যক্তিও বাংলাদেশে নেই। তবুও বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করে এবং রাশিয়াকে কোনো তত্ত্বাবধান ছাড়াই নির্মাণকাজের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়। এর কারণ, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন।